নেত্রকোনায় মুঠোফোন চুরির অভিযোগে দুই শিশুকে গাছে বেঁধে নির্যাতন
নেত্রকোনার মদনে মুঠোফোন চুরির অভিযোগে দুই শিশুকে গাছে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ বুধবার বিকেলে উপজেলার কৃষি কার্যালয়সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। নির্যাতনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ওই দুই শিশুকে উদ্ধার করে তাদের হেফাজতে নিয়েছে।
ঘটনায় জড়িত অভিযোগে সুকেল মিয়া (২৬) ও জয়নাল মিয়া (২০) নামের দুই যুবককে আটক করেছে পুলিশ। সুকেল মিয়া মদন পৌরসভার আগরিপাড়া এলাকার বাসিন্দা। আর জয়নাল মিয়া উপজেলার খাগুরিয়া এলাকার বাসিন্দা।
নির্যাতনের শিকার শিশুদের মধ্যে একজনের বয়স ১২ বছর, অপরজনের ১৩ বছর। তাদের মধ্যে একজনের বাড়ি চানগাঁও ইউনিয়নের একটি গ্রামে। অপর শিশুটি পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা।
এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা ও থানা-পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মদন পৌরসভার কৃষি কার্যালয়ের সামনে থেকে কয়েকটি বাস সিলেটে যাওয়া-আসা করে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে সেখানে একটি বাসের দরজা-জানালা বন্ধ করে বাসচালকের সহকারী জয়নাল মিয়াসহ তিনজন ঘুমিয়ে ছিলেন। রাত আনুমানিক দুইটার দিকে বাস থেকে তিনটি স্মার্ট মুঠোফোন চুরি হয়। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আজ দুপুরে দুই শিশুকে নারকেলগাছে বেঁধে নির্যাতন করা হয়। নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মুহূর্তেই ভাইরাল হয়। পরে বিষয়টি পুলিশের নজরে এলে সঙ্গে সঙ্গে অভিযান চালিয়ে শিশুদের সেখান থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। নির্যাতনের জড়িত থাকার অভিযোগে বিকেলে সুকেল মিয়া ও জয়নাল মিয়া নামের দুজনকে আটক করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী একজন বলেন, ওই দুই শিশুকে জয়নাল মিয়াসহ কয়েকজন মোবাইল চুরির অপবাদ দিয়ে রশি দিয়ে একটি নারকেলগাছের সঙ্গে পেঁচিয়ে বেঁধে মারধর করেন। এ ঘটনা সেখানে উপস্থিত অনেকেই ভিডিও করেন। তবে শিশুদের কেউ রক্ষা করতে এগিয়ে আসেননি। তিনি বাধা দিতে চাইলে তাঁকে গালমন্দ করে সরিয়ে দেওয়া হয়।
নির্যাতনের শিকার এক শিশুর চাচা সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার ভাতিজা চুরি করে থাকলে দেশের আইন অনুযায়ী পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। কিন্তু এভাবে গাছের সঙ্গে বেঁধে শিশুদের নির্যাতন করল কেন? আমরা এ ঘটনার বিচার চাই।’
পুলিশ হেফাজতে থাকায় সুকেল মিয়া ও জয়নাল মিয়ার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। জানতে চাইলে মদন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাঈম মোহাম্মদ নাহিদ হাসান বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও দেখে শিশু দুটিকে উদ্ধার করে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। নির্যাতনের শিকার এক শিশুর চাচা লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এ ঘটনায় দুজনকে আটক করা হয়েছে। পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।