গৃহবধূর কাটা মাথা বাঁশঝাড়ের নিচে তামাকখেতে পুঁতে রাখা হয়: পুলিশ
লালমনিরহাট সদর থানার মোগলহাটের ফুলগাছ গ্রামের ভুট্টাখেত থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন গৃহবধূ হাসিনা বেগমের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করা হয়েছে দাবি করেছে পুলিশ। আজ সোমবার দুপুরে লালমনিরহাট পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ দাবির কথা জানানো হয়। দুই সতিনের পারিবারিক কলহের জেরে গৃহবধূকে হত্যা করে তাঁর কাটা মাথা বাঁশঝাড়ের নিচে তামাকখেতে পুঁতে রাখা হয় বলে সংবাদ সম্মেলনে জানায় পুলিশ।
হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার আসামি নিহত গৃহবধূ হাসিনার স্বামী আশরাফুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, ৪ মার্চ রাত ৯টার দিকে লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ফুলগাছ গ্রামের শফিকুল ইসলামের ভুট্টাখেতে একাধিক ব্যক্তির সহায়তায় গৃহবধূ হাসিনা বেগমের শরীর থেকে মাথা কেটে বিচ্ছিন্ন করা হয়। পরে আশরাফুল তাঁর ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় করে হাসিনার বিচ্ছিন্ন মাথা বাড়িতে নিয়ে যান এবং প্রথম স্ত্রী মেহেরুন্নেসাকে (৪৪) দেখান। ৫ মার্চ ভোরে বাড়ির পূর্ব দিকে ভারত সীমান্ত এলাকায় বাংলাদেশের ভেতরে বাঁশঝাড়ের নিচে একটি তামাকখেতে কাটা মাথাটি পুঁতে রাখা হয়।
আশরাফুল ইসলামের প্রথম স্ত্রী মেহেরুন্নেসা ও দ্বিতীয় স্ত্রী হাসিনা বেগমের মধ্যকার পারিবারিক কলহের জের ধরেই এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে পুলিশ জানতে পেরেছে।
সংবাদ সম্মেলনে লালমনিরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নুরনবী, লালমনিরহাটের পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) ওসি মোহাম্মদ সাদসহ পুলিশের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। ওসি মোহাম্মদ নুরনবী জানান, গ্রেপ্তার আশরাফুল ইসলামকে লালমনিরহাটের আদালতে সোপর্দ করে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
গ্রেপ্তার আশরাফুল ইসলাম লালমনিরহাটের আদিতমারীর দুর্গাপুরের দীঘলটারী গ্রামের বাসিন্দা। নিহত হাসিনা বেগম আশরাফুল ইসলামের দ্বিতীয় স্ত্রী। গত বুধবার দুপুরে মোগলহাট ইউনিয়নের ফুলগাছ গ্রামের একটি ভুট্টাখেত থেকে মাথাবিহীন একটি লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে হাতের আঙুলের ছাপ থেকে রংপুরের সিআইডি পুলিশ নিশ্চিত করে, লাশটি আশরাফুলের স্ত্রী হাসিনা বেগমের।
ঘটনার পর থেকে আশরাফুল ও তাঁর প্রথম স্ত্রী মেহেরুন্নেসা উধাও হয়ে যান। গত শুক্রবার বিকেলে লালমনিরহাট সদর থানার পুলিশ মেহেরুন্নেসাকে আটক করে জিজ্ঞেসাবাদের জন্য সদর থানায় নিয়ে আসে। শনিবার মেহেরুন্নেসা জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তাঁর সতিন হাসিনা বেগমের বিচ্ছিন্ন মাথা পুঁতে রাখার তথ্য দেন। সেই তথ্যানুযায়ী আদিতমারীর দুর্গাপুরে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত এলাকার একটি তামাকখেতে পুঁতে রাখা অবস্থায় হাসিনার বিচ্ছিন্ন মাথা উদ্ধার করা হয়।