সুন্দরবনে জলদস্যু আসাবুর বাহিনীর প্রধান ও তাঁর সহযোগী গ্রেপ্তার

গ্রেপ্তার আসাবুর সানা (ডানে) ও আলমগীর মীরছবি: সংগৃহীত

সুন্দরবনে জলদস্যু আসাবুর বাহিনীর প্রধান আসাবুর সানাসহ (৪২) দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে সুন্দরবনের ঠাকুরবাড়ি ঘাট এলাকা থেকে কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের সদস্যরা তাঁদের গ্রেপ্তার করেন। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে ২টি একনলা বন্দুক ও ৪টি গুলি উদ্ধার করা হয়।

গ্রেপ্তার আসাবুর সানার বাড়ি খুলনার দাকোপ উপজেলার সুতারখালী গ্রামে। তাঁর সহযোগী গ্রেপ্তার আলমগীর মীরের (২৮) বাড়িও সুতারখালী গ্রামে। তাঁদের বিরুদ্ধে খুলনার বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা আছে। গত ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর সুন্দরবনে দস্যু কার্যক্রমে সক্রিয় হয় আসাবুর বাহিনী। গত কয়েক মাস খুলনা রেঞ্জ–সংলগ্ন এলাকায় জেলেদের অপহরণের পর মুক্তিপণ দাবি, ডাকাতি, ছিনতাই, চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধমূলক তৎপরতা শুরু করেন তাঁরা।  

কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের অপারেশন কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার শামসুল আরেফীন জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে আসাবুর বাহিনীর প্রধান আসাবুর সানা ও তাঁর সহযোগীকে ২টি একনলা বন্দুক ও ৪টি গুলিসহ আটক করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে দাকোপ থানায় একটি অবৈধ অস্ত্র মামলা ও ২টি ডাকাতিসহ একাধিক মামলা রয়েছে। আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ওই দুজনকে দাকোপ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

সুতারখালী এলাকার ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘৭ আগস্ট থেকে আসাবুরের বাহিনী বনে আবারও দস্যুতা করতে নামে। গত কয়ক মাসে আমার এলাকার অন্তত ৪০ জন জেলে এই দস্যু বাহিনীর হাতে অপহৃত হয়েছিলেন। পরে তাঁদের দেওয়া একটি বিকাশ নম্বারে খরচসহ ২০ হাজার ৪০০ টাকা পাঠাতে হয়েছে। তারপর তাঁরা মুক্তি পেয়েছেন। আসাবুরের গ্রেপ্তারের খবরে বনজীবীদের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে।’

সুন্দরবনে মাছ ধরতে যাওয়া জেলেরা জনিয়েছেন, আসাবুর বাহিনী বেশিরভাগ সময়ে অবস্থান করত কালাবগি, ভদ্রা, শরবত খালী, হড্রা, আদাচাই ও পাটকোস্টা–সংলগ্ন এলাকায়। তাই ওই এলাকায় জেলেরা কম যেতেন।

সুন্দরবন–সংলগ্ন কালাবগি গ্রামের অহিদুল শেখ বলেন, ‘আমাকে সুন্দরবনের শরবত খালীর খাল এলাকা থেকে অপহরণের পর বেদম মারপিট করে রক্তাক্ত জখম করে আসাবুর বাহিনী। এরপর আমার পরিবারের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে ১০ হাজার ২০০ টাকা দিয়ে মুক্তি পেয়েছিলাম। আসাবুরের গ্রেপ্তারের খবরে খুশি হয়েছি।’