কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাইকে (কানু) লাঞ্ছিত করার ঘটনায় গ্রেপ্তার এক আসামি জামিন পেয়েছেন। ওই ঘটনায় আর কোনো আসামি গ্রেপ্তার হননি।
এদিকে ভুক্তভোগী আবদুল হাইয়ের অভিযোগ, মামলার প্রধান দুই আসামি বহিষ্কৃত জামায়াত সমর্থক আবুল হাশেম ও অহিদুর রহমানসহ অন্যান্য আসামির এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। পুলিশ তাঁদের গ্রেপ্তার করতে কোনো তৎপরতা চালাচ্ছে না। আসামিরা বিভিন্নভাবে তাঁকে ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের হুমকি দিচ্ছেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাইয়ের বাড়ি উপজেলার লুদিয়ারা গ্রামে। তিনি কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং ওই সংগঠনের কুমিল্লা দক্ষিণ জেলার সাবেক সহসভাপতি। গত ২২ ডিসেম্বর গ্রামের পাশে বাতিসা ইউনিয়নের কুলিয়ারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে তাঁর গলায় জুতার মালা পরিয়ে লাঞ্ছিত করে একদল লোক। পরে রাতে এ ঘটনার ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় ২৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি, জুতার মালা পরানোয় ১০০ কোটি টাকার মানহানি এবং মারধরের অভিযোগে ২৫ ডিসেম্বর আবদুল হাই থানায় মামলা করেন। এতে ১০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ১০ থেকে ১২ জনকে আসামি করা হয়।
ওই ঘটনায় ২৩ ডিসেম্বর পুলিশ পাঁচজনকে আটক করে। তাঁদের ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ২৪ ডিসেম্বর কুমিল্লার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। তাঁদের মধ্যে উপজেলার কুলিয়ারা গ্রামের আবদুল হক মজুমদারের ছেলে ইসমাইল হোসেন মজুমদার (৪৩) ছিলেন এজাহারভুক্ত আসামি। অন্য চারজন জামিনে মুক্তি পান। পরে গত সোমবার দুপুরে ইসমাইল হোসেন মজুমদারের জামিন মঞ্জুর করেন আদালত। মামলার ১ ও ২ নম্বর আসামি হলেন জামায়াতের কর্মী আবুল হাশেম ও অহিদুর রহমান। ওই ঘটনার পর জামায়াত থেকে তাঁদের বহিষ্কার করা হয়।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাইয়ের বাড়ি উপজেলার লুদিয়ারা গ্রামে। তিনি কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং ওই সংগঠনের কুমিল্লা দক্ষিণ জেলার সাবেক সহসভাপতি। গত ২২ ডিসেম্বর গ্রামের পাশে বাতিসা ইউনিয়নের কুলিয়ারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে তাঁর গলায় জুতার মালা পরিয়ে লাঞ্ছিত করে একদল লোক।
আবদুল হাই বলেন, ‘আসামিরা এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। আমরা জানতে পেরেছি পুলিশ তাঁদের আর ধরবে না। এ জন্য তাঁরা বুক ফুলিয়ে এলাকায় চলাফেরা করছেন। উল্টো আমাকে এবং আমার পরিবারকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছেন মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য। আমরা আতঙ্কে আছি, নিরাপত্তাহীনতার কারণে বাড়িতেও যেতে পারছি না। আমি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এই অপমানের বিচার চেয়ে মামলা করেছি। কিন্তু অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে কোনো বিচার পাব না।’
বীর মুক্তিযোদ্ধার ছেলে উপজেলার বাতিসা ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া বলেন, ‘সরকারের চাপ ও গণমাধ্যমের ঘটনাটি ব্যাপকভাবে প্রচারিত হওয়ায় পুলিশ মামলা নিয়েছিল। কিন্তু এখন পুলিশই আসামিদের পক্ষে। একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে আমার বাবার এই অপমানের বিচার চাই।’
এ বিষয়ে চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ টি এম আক্তার উজ জামান বলেন, ‘আসামির জামিনের বিষয়টি আমি জানি না। তবে মামলার অপর আসামিরা এলাকা থেকে পলাতক। পুলিশ তাঁদের ধরতে বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করেছে। আমরা আসামিদের ধরার চেষ্টা করছি না বিষয়টি সঠিক নয়, আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’