গাজীপুরে সড়কে আরেক কারখানার শ্রমিকেরা, সংঘর্ষ-আগুনে রণক্ষেত্র

গাজীপুর মহানগরীর পূর্ব কলতাসুতি এলাকার অ্যামাজন নিটওয়্যার নামের কারখানায় অগ্নিসংযোগ করেন শ্রমিকেরা। ছবিটি আজ সোমবার দুপুর ১২টার দিকে তোলাছবি: প্রথম আলো

বেক্সিমকোর কারখানায় শ্রমিক বিক্ষোভের জেরে গাজীপুর মহানগরীর পানিশাইল এলাকায় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা আরেকটি কারখানার শ্রমিকেরা বিক্ষোভ শুরু করেছেন। এ সময় শ্রমিক ও এলাকাবাসীর মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে আহত হয়েছেন অন্তত পাঁচজন। এ সময় উত্তেজিত শ্রমিকেরা জিরানি বাজারের পাশে অ্যামাজন নিটওয়্যার নামের একটি কারখানায় অগ্নিসংযোগ করেন।

শ্রমিক, এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত দুই দিনের মতো আজকেও বেক্সিমকোর শ্রমিকেরা সকাল থেকে গাজীপুর মহানগরীর চক্রবর্তী এলাকায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। এ কারণে আশপাশের অন্তত ২০টি কারখানা ছুটি ঘোষণা করা হয়। এ ছাড়া ১ নভেম্বর থেকে পানিশাইল এলাকার ডরিন ফ্যাশন লিমিটেড কারখানাটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছিল কর্তৃপক্ষ। গতকাল রোববার কারখানা খুলে দেওয়া হলেও দুপুরের পর ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়।

আজ সোমবার সকালে কাজে যোগ দিতে এসে ডরিন ফ্যাশন লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা দেখেন, তাঁদের কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে নোটিশ সাঁটিয়ে দেওয়া হয়েছে। ওই নোটিশ দেখে কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে শ্রমিকেরা বিক্ষোভে শুরু করেন। একপর্যায়ে তাঁরা চন্দ্রা-নবীনগর সড়কের জিরানী এলাকায় অবস্থান নিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করেন। একই সময়ে একই সড়কের পৃথক স্থানে বেক্সিমকো কারখানার শ্রমিকেরাও অবরোধ করে বিক্ষোভ করছিলেন।

গাজীপুর মহানগরীর অ্যামাজন নিটওয়্যার কারখানায় আগুন ধরিয়ে দেন শ্রমিকেরা
ছবি: প্রথম আলো

বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ডরিন ফ্যাশন ও বেক্সিমকো কারখানার শ্রমিকদের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে তাঁদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে অন্তত পাঁচজন আহত হন। আহত শ্রমিকদের স্থানীয় ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

শ্রমিকেরা পানিশাইল ও কলতাসুতি এলাকায় ঢুকে পড়ে এলাকার লোকজনদের মারধর করেন। এতে এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে শ্রমিকদের ধাওয়া দেন। বেশ কিছু সময় ত্রিমুখী পাল্টাপাল্টি ধাওয়া চলে। এ সময় ডরিন ফ্যাশন ও বেক্সিমকোর কিছু শ্রমিক পূর্ব কলতাসুতি এলাকার অ্যামাজন নিটওয়্যার নামের একটি কারখানায় আগুন ধরিয়ে দেন। খবর পেয়ে শিল্প পুলিশ, থানা–পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনেন।

আরও পড়ুন

গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক আবদুল্লাহ আল আরেফিন বলেন, খবর পেয়ে কাশিমপুর থেকে দুটি ইউনিট পাঠানো হয়েছে। সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় আগুন নেভানো হবে।

কাশিমপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. হানিফ বলেন, কারখানার আগুন জ্বলছে। এক ঘণ্টা হয়ে গেলেও ফায়ার সার্ভিস কাজ শুরু করতে পারেনি।