চাচাতো বোনকে বিয়ের জেরে বিশ্ববিদ্যালয়শিক্ষাথী ওমর ফারুককে হত্যা: পুলিশ
ময়মনসিংহে বিশ্ববিদ্যালয়শিক্ষার্থী ওমর ফারুক হত্যাকাণ্ডের আলামত তাঁর চাচার বাসায় পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। স্বজনদের বরাত দিয়ে পুলিশ বলেছে, চাচাতো বোনকে বিয়ে করার জের ধরে ওমর ফারুককে হত্যা করা হয়েছে। চাচার বাড়িতে হত্যার পর তাঁর লাশ ট্রলি ব্যাগে করে নদীতে ফেলে দেওয়া হয়। ঘটনার পর তাঁর চাচা–চাচি বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন।
নিহত ওমর ফারুক ওরফে সৌরভের (২২) গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার তারাটি গ্রামে। তবে তাঁর পরিবার স্থায়ীভাবে ঢাকায় মতিঝিলে বসবাস করে। তাঁর বাবার নাম ইউসুফ আলী। ওমর ফারুক গুলশানের বেসরকারি প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। গতকাল রোববার সকালে ময়মনসিংহ সদর উপজেলার মনতলা এলাকায় সেতুর নিচে মাথা ও দুই পা বিচ্ছিন্ন অবস্থায় ওমর ফারুকের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় নিহত ওমর ফারুকের বাবা ইউসুফ আলী বাদী হয়ে গতকাল রাতে ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি মামলা করেন। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাঈন উদ্দিন জানান, মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। এ ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।
গতকাল সকাল ১০টার দিকে ময়মনসিংহ সদর উপজেলার মনতলা এলাকায় ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইল মহাসড়কে সুতিয়া নদীর সেতুর নিচ থেকে ওমর ফারুকের লাশ উদ্ধার করে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। লাশের দুই পা ও মাথা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল। কালো রঙের একটি ব্যাগে লাশের শরীর এবং পলিথিনে মোড়ানো ছিল মাথা ও দুই পা।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফারুক হোসেন জানান, চাচাতো বোনকে বিয়ে করার কারণে ওমর ফারুককে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। হত্যার পর বাড়ি ছেড়ে পরিবার নিয়ে পালিয়েছেন তাঁর চাচা। তাঁদের ধরতে অভিযান চলছে।
নিহত ওমর ফারুকের ফুফাতো ভাই জিল্লুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, গত ১২ মে ঢাকায় পরিবারের অজ্ঞাতে ওমর ফারুক ও তাঁর চাচাতো বোন বিয়ে করেন। পরে তাঁরা বাসায় বিয়ের কথা জানান। তবে দুই পরিবারের কেউ বিষয়টি মেনে নেননি। পরে অবশ্য বিয়ে মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয় এবং দুজন নিজ নিজ বাসায় ফিরে যান।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ছায়া তদন্ত করছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।নাম প্রকাশ না করার শর্তে পিবিআইয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘সৌরভের (ওমর ফারুক) বিভিন্ন স্বজনের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, গত মাসে চাচাতো বোনকে বিয়ে করেন সৌরভ। কিন্তু দুই পরিবার বিষয়টি মেনে নেয়নি। তখন সৌরভকে হুমকিও দেওয়া হয়েছিল। পরে মেয়েটিকে কানাডা পাঠিয়ে দেওয়া হয়। আমরা তাঁর চাচার বাসায় গিয়ে বুঝতে পেরেছি সেখানেই হত্যার ঘটনাটি ঘটেছে। হত্যাকাণ্ডের অনেক আলামত পাওয়া গেছে।’