জামালপুরে আটক ব্যবসায়ীকে পুলিশের গাড়ি থেকে নামিয়ে নিলেন এলাকার লোকজন

পুলিশের ব্যবহৃত গাড়ি থেকে আরিফুর রহমানকে নামিয়ে নিয়ে যান এলাকার লোকজন। বৃহস্পতিবার দুপুরে শহরের শাহপুর এলাকার জামালপুর রেলস্টেশন–সংলগ্ন এলাকায়ছবি: প্রথম আলো

জামালপুর শহরে জমিসংক্রান্ত বিরোধের অভিযোগে আটক স্থানীয় এক ব্যবসায়ীকে পুলিশের গাড়ি থেকে নামিয়ে নিয়ে গেছেন এলাকার লোকজন। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে শহরের শাহপুর এলাকার জামালপুর রেলস্টেশন–সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

ওই ব্যবসায়ীর নাম আরিফুর রহমান চিকু (৩৫)। তিনি শাহপুর এলাকার বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী। তাঁকে হাতকড়া পরিয়ে থানায় আনার চেষ্টা করে পুলিশ। এ সময় স্থানীয় লোকজনের প্রতিরোধের মুখে তাঁর হাতকড়া খুলে দেয় পুলিশ। পরে পুলিশের গাড়ি থেকে আরিফুর রহমানকে নামিয়ে নিয়ে যান এলাকার লোকজন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আরিফুর রহমান মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘একখণ্ড জমিতে আমি কাজ করছিলাম। তখন কিছু লোক আমার জমির দেয়াল ভেঙে ফেলে। আমি ও আমার স্বজনেরা সেখানে ছুটে যাই। তখন পুলিশও আসে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই পুলিশ আমাকে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে থানায় নিয়ে যাওয়া শুরু করে। তখন আমার এলাকার লোকজন প্রতিবাদ করেন। এলাকাবাসী পুলিশের গাড়ি ঘেরাও করেন। এলাকার লোকজনের প্রতিরোধের কারণে পুলিশ আমার হ্যান্ডকাফ খুলে দিতে বাধ্য হয়। পরে এলাকাবাসী পুলিশের গাড়ি থেকে আমাকে নামিয়ে নিয়ে যান।’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শাহপুর এলাকায় একখণ্ড জমি নিয়ে আরিফুর রহমানের প্রতিবেশীর সঙ্গে বিরোধ চলে আসছিল। আজ দুপুরে ওই জমি নিয়ে আবারও ঝগড়া শুরু হয়। এক পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে জামালপুর সদর থানা–পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় এবং সেখান থেকে আরিফুর রহমানকে আটক করে তাঁকে হাতকড়া পরায়। এলাকার লোকজন ক্ষুব্ধ হয়ে পুলিশের গাড়ি ঘিরে ফেলেন। তাঁদের প্রতিরোধের মুখে তাঁর হাতকড়া খুলে দিতে বাধ্য হয় পুলিশ। পরে ক্ষুব্ধ লোকজন তাঁকে পুলিশের গাড়ি থেকে নামিয়ে নিয়ে যান। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ ও জেলা গোয়েন্দা (শাখা) পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। কিন্তু তাঁকে আর আটক করে আনতে পারেননি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।

দুপুরে শাহপুর এলাকায় পুলিশের দুটি ও ডিবির একটি গাড়ি চোখে পড়ে। স্থানীয় লোকজন একটি গাড়ির চারপাশে ভিড় করছিলেন। জামালপুর জেলা পুলিশের গোয়েন্দা (ডিবি) শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. নাজমুস সাকিব প্রথম আলোকে বলেন, ‘সেখানে আমরা ব্যাকআপ টিম হিসেবে গিয়েছিলাম। মূলত সদর থানা–পুলিশ কোনো এক আসামিকে ধরতে গিয়েছিল। আমি পুরো বিষয়টি জানি না। তবে সেখানে কোনো একটা ঝামেলা হয়েছিল।’

জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু ফয়সল মো. আতিক প্রথমে বলেন, জমি নিয়ে মারামারির অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ গিয়েছিল। সেখানে একজনকে আটক করার কথা শুনেছিলেন। পরে সেখানে কী হয়েছে, তিনি জানেন না। কিছুক্ষণ পর ফোন করে ওসি বলেন, জমিজমা নিয়ে বিরোধের কারণে এক পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে সেখানে পুলিশ গিয়েছিল। সেখানে একজনকে আটকও করা হয়েছিল। কিন্তু ওই ব্যক্তি অপরাধী না হওয়ায় তাঁকে পুলিশই ছেড়ে দিয়েছে।