সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার প্রতিবাদ করায় বিএনপি নেতার ওপর হামলা, আহত ৬
যশোরের কেশবপুর উপজেলায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা, লুটপাট ও চাঁদাবাজি প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেওয়ায় উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আবুল হোসেনের ওপর হামলা চালানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় চালানো ওই হামলায় তাঁর ছয়জন সমর্থক আহত হয়েছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার সরকারপ্রধান হিসেবে শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর কেশবপুরের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। সোমবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে পাজিয়া বাজারের চাল ব্যবসায়ী বিকাশ চন্দ্র পালের বাড়িতে ভাঙচুরের পাশাপাশি তাঁর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে লুটপাট চালানো হয়।
বিকাশ পাল দাবি করেন, তাঁর গুদাম থেকে ২০০ বস্তা চাল, সাড়ে ৪০০ বস্তা খইল, আড়াই শ বস্তা ভুসি এবং আড়াই শ বস্তা আটা লুট হয়। এ ছাড়া নগদ ৯ লাখ টাকাও লুট করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।
এ ঘটনার পর বিকাশ পালের বাড়িতে যান বিএনপি নেতা আবুল হোসেন (আজাদ)। এ বিষয়ে বিকাশ পাল আরও জানান, দুর্বৃত্তরা তাঁর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান লুট করেই ক্ষান্ত হয়নি, গত সোমবার ভয়ভীতি দেখিয়ে তাঁর কাছ থেকে আরও ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন নতুনহাট এলাকার রিপন নামের এক ব্যক্তি। পরে রিপন তাঁর কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকাও নেন। বিষয়টি জানতে পেরে গতকাল বিকেলে রিপনকে ডেকে পাঠান আবুল হোসেন। তাঁকে ওই টাকা ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেন।
সুযোগ সন্ধানী ব্যক্তিরা বিভিন্ন স্থানে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও হামলা চালাচ্ছে। যত বাধা-ই আসুক না কেন, এই দুঃসময় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়সহ সবার পাশে থাকব।কেশবপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আবুল হোসেনের
এরপর গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে পাজিয়া বাজার থেকে কেশবপুর শহরের রওনা হলে নতুনহাট মোড় এলাকায় রিপনের নেতৃত্বে ১৫ থেকে ২০ জন আবুল হোসেনের ব্যবহৃত মাইক্রোবাসে পেছন থেকে হামলা চালায়। এ সময় তাঁর গাড়ির পেছনের কাচগুলো ভেঙে দেওয়া হয়। আবুল হোসেনের দাবি, সামনের দিকের আসনে থাকায় তাঁর কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। তবে গাড়ির পেছনে থাকা তাঁর ছয়জন সমর্থক আহত হন। তাঁদের মধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন পাঁচজন। তাঁরা হলেন ইমরান, সোহান, লিটন, ইউনুস ও ইয়াসিন।
আবুল হোসেন আরও বলেন, ‘সুযোগ সন্ধানী ব্যক্তিরা বিভিন্ন স্থানে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও হামলা চালাচ্ছে। যত বাধা-ই আসুক না কেন, এই দুঃসময় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়সহ সবার পাশে থাকব।’
হামলার বিষয়ে জানতে রিপনের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তাঁর ব্যবহৃত ফোনটি বন্ধ পাওয়া গেছে।
বিএনপির ওই নেতার ওপর হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে উপজেলা বিএনপি। আজ দুপুরে উপজেলার থানা মোড় এলাকায় বিএনপির কার্যালয়ে সম্প্রীতি সমাবেশ নিন্দা প্রকাশ করেন স্থানীয় নেতা-কর্মীরা।