বাংলা চ্যানেল ১৯ বার পাড়ি দিয়ে রেকর্ড করলেন লিপটন
টানা ১৯ বার বঙ্গোপসাগরের ‘বাংলা চ্যানেল’ সাঁতরে পাড়ি দিয়ে সর্বোচ্চ একক রেকর্ড করলেন লিপটন সরকার। আজ সোমবার সকাল ৯টা ৩২ মিনিটে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপের পশ্চিমপাড়া সমুদ্রসৈকত থেকে লিপটন সরকার সাঁতার শুরু করেন। সাঁতারে ৬ ঘণ্টা ৫৩ মিনিট সময় নিয়ে তিনি সেন্ট মার্টিনের উত্তর সৈকতে পৌঁছান বিকেল ৪টা ২৫ মিনিটে।
বাংলা চ্যানেল পাড়ি দেওয়ার একক সর্বোচ্চ রেকর্ড লিপটন সরকারের। বাংলাদেশ টেলিভিশনের চিত্রগ্রাহক মনিরুজ্জামান ১২ বার বাংলা চ্যানেল পাড়ি দিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন। আর আয়রনম্যান মোহাম্মদ সামছুজ্জামান আরাফাত ৯ বার পাড়ি দিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছেন।
১৭ বছরে ১৯ বার বাংলা চ্যানেল পাড়ি দিলাম। ২২ ডিসেম্বর ১৭তম বাংলা চ্যানেল সাঁতারে জোয়ারের বিপরীত প্রায় তিন ঘণ্টা যুদ্ধ করে শেষ করতে না পারায় মনটা খুব খারাপ ছিল। চার দিন পর আজ ২৬ ডিসেম্বর আবার চেষ্টা করে সফলভাবে সমাপ্ত করতে পারায় আমি খুবই খুশি।
বঙ্গোপসাগরে টেকনাফ থেকে সেন্ট মার্টিন পর্যন্ত ১৬ দশমিক ১ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সমুদ্রপথ বাংলা চ্যানেল নামে পরিচিত। আজকের সাঁতারের আয়োজন করেছে ষড়জ অ্যাডভেঞ্চার ও এক্সট্রিম বাংলা।
বাংলা চ্যানেল সাঁতারের প্রধান সমন্বয়ক লিপটন সরকার বলেন, ২২ ডিসেম্বর বাংলা চ্যানেল সাঁতারে অংশগ্রহণ করলেও বাংলা চ্যানেল সফলভাবে পাড়ি দেওয়া সম্ভব হয়নি। তখন সাগর শান্ত ছিল, কিন্তু তাপমাত্রা অনেক কম ছিল। অন্যদিকে, ভাটার টানটাও কম ছিল। এ কারণে নানা সমস্যায় পড়েন এবং জোয়ারে পড়ে প্রায় আড়াই ঘণ্টা উল্টো স্রোতে সাঁতার কেটে সেবার ৭ ঘণ্টা ৫৫ মিনিট সময় নিয়েও শেষ করতে পারেননি।
সাগরের বুকে দূরপাল্লার এ সাঁতার সম্পর্কে লিপটন সরকার বলেন, আন্তর্জাতিক রীতি মেনে এ সাঁতার পরিচালনা করা হচ্ছে। নিরাপত্তার জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থাও নেওয়া হয়। ধারাবাহিকভাবে প্রতিবছর এ নৌপথে সাঁতার অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এতে বাংলাদেশে দূরপাল্লার সাঁতার জনপ্রিয় হচ্ছে।
লিপটন সরকার আরও বলেন, ‘১৭ বছরে ১৯ বার বাংলা চ্যানেল পাড়ি দিলাম। ২২ ডিসেম্বর ১৭তম বাংলা চ্যানেল সাঁতারে জোয়ারের বিপরীত প্রায় তিন ঘণ্টা যুদ্ধ করে শেষ করতে না পারায় মনটা খুব খারাপ ছিল। ২০০৬ সাল থেকে কোনো বছর বাদ যায়নি। মনে হচ্ছিল, এ বছরটা বাদ হয়ে যাবে। চার দিন পর আজ ২৬ ডিসেম্বর আবার চেষ্টা করে সফলভাবে সমাপ্ত করতে পারায় আমি খুবই খুশি।’
বঙ্গোপসাগরে দূরপাল্লার সাঁতারের উপযোগী ১৬ দশমিক ১ কিলোমিটার দীর্ঘ বাংলা চ্যানেল আবিষ্কার করেন প্রয়াত কাজী হামিদুল হক। ২০০৬ সালে প্রথমবারের মতো বাংলা চ্যানেল জয় করেছিলেন লিপটন সরকার, ফজলুল কবির সিনা ও সালমান সাইদ।