সরকারি অর্থে কেনা থানার দুটি এসি খুলে নিলেন বদলি হওয়া ওসি
হবিগঞ্জের বাহুবল থানার সদ্য বিদায়ী ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাকিবুল ইসলাম খানের বিরুদ্ধে থানা ও বাসভবনে সরকারি অর্থে স্থাপিত দুটি শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্র (এসি) খুলে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ওসির এ কর্মকাণ্ডে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন হবিগঞ্জ-১ (নবীগঞ্জ-বাহুবল) আসনের সংসদ সদস্য গাজী মোহাম্মদ শাহ নওয়াজ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এসি দুটি সরকারি বরাদ্দ থেকে থানায় ওসির কক্ষে ও তাঁর বাসভবনে স্থাপন করা হয়। এটি কাউকে ব্যক্তিগতভাবে দেওয়া হয়নি। তিনি এ এসি খুলে নেওয়ার অধিকার রাখেন না।
স্থানীয় লোকজন সূত্রে জানা গেছে, হবিগঞ্জের বাহুবল থানায় ২০২১ সালের অক্টোবরে ওসি হিসেবে যোগদান করেন মো. রাকিবুল ইসলাম খান। তিনি যোগদানের পর স্থানীয় সংসদ সদস্য গাজী মোহাম্মদ শাহ নওয়াজ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের টিআর প্রকল্পের অধীনে ২০২১ সালের ১৯ জুলাই ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেন। এ অর্থ দিয়ে সেই সময় ওসির অফিসকক্ষে ও তাঁর বাসভবনে দুটি এসি লাগানো হয়।
হবিগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য গাজী মোহাম্মদ শাহ নওয়াজ ওসির এ কর্মকাণ্ডের জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে বলেন। পাশাপাশি তিনি পুলিশের ঊর্ধ্বতনদের বিষয়টি অবহিত করবেন বলে জানান।
সম্প্রতি সরকারি এক আদেশে ওসি রাকিবুল ইসলাম খানকে বাহুবল থানা থেকে একই জেলার মাধবপুর থানায় বদলি করা হয়। তিনি এ বদলির নির্দেশ পাওয়ার পর চার থেকে পাঁচ দিন আগে অফিসে ও বাসভবনে স্থাপন করা দুটি এসি খুলে নেন। পাশাপাশি থানায় বিভিন্ন সমাজসেবকের দান করা আসবাব ও সৌন্দর্যবর্ধনকারী উপহারসামগ্রী নিয়ে যান।
এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা তৈরি হয়। গতকাল বুধবার উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের এক অনুষ্ঠান শেষে ইউএনওর কার্যালয়ে সরকারি কর্মকর্তারা ও এলাকাবাসী ওসির ঘটনাটি স্থানীয় সংসদ সদস্যের নজরে আনেন। সেখানে বাহুবল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আবদুল হাইও উপস্থিত ছিলেন। এ সময় ঘটনা শুনে সংসদ সদস্য ক্ষুব্ধ হন। তিনি বলেন, ‘সরকারি প্রকল্পের টাকা থেকে এসিগুলো কিনে দেওয়া হয় থানা অফিস ও ওসির বাসভবনের জন্য। আমি তো কাউকে ব্যক্তিগত ভাবে দিইনি। এখানে যিনিই আসবেন ওসি হয়ে, তিনিই তা ব্যবহার করবেন।’
সংসদ সদস্য ওসির এ কর্মকাণ্ডের জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে বলেন। পাশাপাশি তিনি পুলিশের ঊর্ধ্বতনদের বিষয়টি অবহিত করবেন বলে জানান।
বাহুবল মডেল থানায় সদ্য যোগদান করা ওসি মো. মশিউর রহমান জানান, তিনি যোগদানের পর অফিসে এবং বাসায় কোনো এসি দেখতে পাননি।
এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে বদলি হওয়া ওসি রাকিবুল ইসলাম খানের সরকারি মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন ধরেননি। পরে তাঁর উদ্দেশে খুদে বার্তা পাঠানো হলে তাঁর কোনো জবাব তিনি দেননি।