চট্টগ্রামে জোড়া খুনের ঘটনায় দুই মামলা, শিবিরের সাজ্জাদসহ চারজন আসামি

মোহাম্মদ আনিস (৩৮) ও মাসুদ কায়সার (৩২)ছবি: পরিবারের সৌজন্যে

চট্টগ্রাম নগরে অক্সিজেন-কুয়াইশ সড়কে দুজনকে হত্যার ঘটনায় দুই থানায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। শিবিরের সাজ্জাদ হোসেনসহ চারজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা তিন-চারজনকে আসামি করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার বিকেলে হাটহাজারী থানায় ও রাতে বায়েজিদ বোস্তামী থানায় মামলা দুটি করা হয়।

দুই মামলায় নাম প্রকাশ করা আসামিরা হলেন মো. আরমান, মো. জাহাঙ্গীর, মো. সাজ্জাদ হোসেন ও মো. হাসান। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে চট্টগ্রামের অক্সিজেন-কুয়াইশ সড়কে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয় মোহাম্মদ আনিস (৩৮) ও মাসুদ কায়সারকে (৩২)। প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিদের ভাষ্য, সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে অক্সিজেন-কুয়াইশ সড়ক ধরে হেঁটে যাচ্ছিলেন আনিস ও মাসুদ। নাহার গার্ডেন রেস্তোরাঁ এলাকায় পৌঁছালে মোটরসাইকেলে আসা দুর্বৃত্তরা তাঁদের লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে।

এলাকাবাসী জানান, আনিস ও মাসুদ স্থানীয় রাজনীতিতে হাটহাজারী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের নেতা ইউনুস গণি চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তাঁরা চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার পশ্চিম কুয়াইশ এলাকার বাসিন্দা। পুলিশ বলছে, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, ব্যবসা ও রাজনৈতিক মতাদর্শ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব রয়েছে। এ দ্বন্দ্বের জেরেই এক পক্ষের লোক তাঁদের দুজনের ওপর গুলি চালান।

শুক্রবার রাতে বায়েজিদ বোস্তামী থানায় নিহত আনিসের স্ত্রী শামিম আকতার বাদী হয়ে হত্যা মামলাটি দায়ের করেন। এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, বাড়ি ফেরার সময় অক্সিজেন-কুয়াইশ সড়কে নাহার গার্ডেন এলাকায় পৌঁছালে আসামিরা পূর্বকল্পিতভাবে মোটরসাইকেলে এসে আনিস ও মাসুদের ওপর এলোপাতাড়ি গুলি করে। এ সময় মাসুদ পালানোর চেষ্টা করলে তাঁকেও গুলি করা হয়। ঘটনাস্থলে আনিস মারা যায়। পুলিশসহ তাঁরা ঘটনাস্থলে পৌঁছালে আনিসের শরীরের বিভিন্ন অংশে শতাধিক গুলির চিহ্ন রয়েছে।

অন্যদিকে হাটহাজারি থানায় মামলা করেন নিহত মাসুদের ভাই মো. আরিফ। তিনি এজাহারে উল্লেখ করেন, পূর্বশত্রুতার জেরে আনিসকে গুলি করার পর মাসুদ পালিয়ে পশ্চিম কুয়াইশ এলাকায় আসে। সেখানে আসামিরা তাঁকে রামদা ও আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে হামলা করে। মাসুদের চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে আসামিরা পালিয়ে যায়। একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মাসুদ মারা যান।

হাটহাজারীর মদুনাঘাট পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের পরিদর্শক মুহাম্মদ মহিউদ্দিন সুমন প্রথম আলোকে বলেন, মাসুদ কায়সার হত্যার ঘটনায় করা মামলায় চারজনের নাম উল্লেখ করে আসামি করা হয়। এর মধ্যে একজন শীর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদ। আসামিদের মধ্যে দুজন নিহত ব্যক্তিদের একই রাজনৈতিক দলের প্রতিপক্ষের লোক।

বায়েজিদ বোস্তামী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সনজয় কুমার সিনহা প্রথম আলোকে বলেন, আসামিরা সবাই চিহ্নিত সন্ত্রাসী। তাঁদের প্রত্যেকের নামে আগের মামলা আছে। এলাকায় পেশাদার সন্ত্রাসী হিসেবে তাঁরা পরিচিত। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।