বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে নয়, ভারত সম্পর্ক গড়েছে শেখ হাসিনার সঙ্গে: মামুনুল হক
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হক বলেছেন, ‘আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র ১৫ বছর বাংলাদেশের মানুষের কোনো অধিকারের কথা চিন্তা করে নাই। মানুষের অধিকারকে তারা দুপায়ে দলেছে। তাদের আস্থা ছিল এ দেশের মানুষের ওপর নয়, ছিল শেখ হাসনার ওপর। তারা সম্পর্ক গড়েছে বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে নয়, শেখ হাসিনার সঙ্গে।’
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে শেরপুর শহরের মাধবপুর এলাকার পৌর ঈদগাহ মাঠে অনুষ্ঠিত গণসমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। ‘ছাত্র-জনতার বিপ্লবে সংঘটিত গণহত্যার বিচার ও নৈরাজ্যবাদের বিরুদ্ধে গণজাগরণ সৃষ্টির লক্ষ্যে’ এ সমাবেশের আয়োজন করে খেলাফত মজলিস শেরপুর জেলা শাখা। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি মাওলানা শফিকুল ইসলাম।
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মামুনুল হক বলেন, শেখ হাসিনার রাজনীতি ছিল জনতাকে শোষণ ও প্রতিশোধ নেওয়ার রাজনীতি। শেখ হাসিনার রাজনীতি ছিল দুর্নীতি আর লুটপাটের মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে পঙ্গু করে দেওয়ার রাজনীতি। সেই সঙ্গে বাংলাদেশকে অন্য একটি দেশের একটি করত অঙ্গরাজ্যে পরিণত করার রাজনীতি। তাঁর রাজনীতি ছিল বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী না হয়ে অন্য একটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার রাজনীতি।
শেখ হাসিনা বাংলাদেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে আরেকটি রাষ্ট্রের স্বার্থ রক্ষার জন্য কাজ করেছিল অভিযোগ করে মামুনুল হক আরও বলেন, ‘আগামী দিনেও আমরা সকল শাসককে স্পষ্ট বার্তা দিতে চাই, দেশের মানুষের অধিকার উপেক্ষা করে, দেশের স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়ে ক্ষমতার মসনদে চিরদিন থাকার দুরভিসন্ধি কখনোই পূরণ হবে না।’
মামুনুল হক বলেন, ‘অনেক রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। এই স্বাধীন দেশে পতিত স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের রাজনীতিতে আর কোনো দিন পুনর্বাসিত হতে পারবে না।’ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও উপদেষ্টাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘কোনো অজুহাতে বা কৌশলে পতিত স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা ও তাঁর দোসরদের বাংলাদেশের মাটিতে পুনর্বাসিত করার উদ্যোগকে এ দেশের মানুষ মানবে না।’
মামুনুল হক বলেন, বাংলাদেশ একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। এ দেশে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টানসহ সব সম্প্রদায়ের মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করবে। সবাই যার যার ধর্মীয় অধিকার ও জানমালের নিরাপত্তার অধিকার ভোগ করবে। এখানে কোনো ধর্মাবলম্বী মানুষকে তার ধর্মীয় অধিকার পালনে বঞ্চিত করার সুযোগ নেই। সংখ্যালঘু মানুষ যেমন তাদের ধর্মীয় অধিকার পালনে অটুট থাকবে, তেমনি এ দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের ইসলামি ও মুসলিম জাতিসত্তাও বাংলাদেশে টিকে থাকবে।
সমাবেশে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব জালাল উদ্দিন আহমদ, আতাউল্লাহ আমীন, সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল হাসনাত জালালী, সহবাইতুল মাল সম্পাদক ফজলুর রহমান, কেন্দ্রীয় সদস্য হেদায়েত উল্লাহ হাদী হাফিজ আহমেদ, শেরপুর জেলা শাখার সম্পাদক আবদুর রাজ্জাক, মাওলানা খালিছুর রহমান প্রমুখ বক্তব্য দেন।