চাঁদাবাজির অভিযোগ ওঠার পর লালমনিরহাট জেলা ছাত্রলীগ নেতাকে অব্যাহতি

লালমনিরহাট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রাশেদ জামান
ছবি: সংগৃহীত

লালমনিরহাট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাশেদ জামানকে (বিলাশ) অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। আদিতমারীর ভেলাবাড়ির এক গরু ব্যবসায়ীকে মারধর করে আড়াই লাখ টাকা চাঁদা আদায়ের অভিযোগ ওঠায় আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে তাঁকে অব্যাহতি দেওয়ার বিষয়টি জানানো হয়েছে।

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ (ইনান) স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সংগঠনবিরোধী, শৃঙ্খলাপরিপন্থী, অপরাধমূলক এবং সংগঠনের মর্যাদা ক্ষুণ্ন হয়, এমন কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে রাশেদ জামানকে তাঁর পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘গরু ব্যবসায়ী আইয়ুব আলীকে আটক ও মারপিট করে আড়াই লাখ টাকা চাঁদা আদায়ের অভিযোগে থানায় অভিযোগ হয়েছে। ঘটনাটি মিডিয়ার মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এ ছাড়া রাশেদ জামানের বিরুদ্ধে আরও কিছু অভিযোগ রয়েছে। তবে সেসব অভিযোগের বিষয়ে বিস্তারিত বলতে রাজি হননি।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, লালমনিরহাটের আদিতমারীর ভেলাবাড়ি ইউনিয়নের গরু ব্যবসায়ী আইয়ুব আলীকে লালমনিরহাট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রাশেদ জামানের কথামতো তাঁর পরিচিত কয়েকজন যুবক গত রোববার দুপুরে লালমনিরহাট শহরের জজ কোট এলাকায় আটক করে লালমনিরহাট সরকারি কলেজে নিয়ে যান। সেখানে রাশেদ জামান উপস্থিতিতে আইয়ুব আলীকে রশি দিয়ে হাত-পা বেঁধে এলোপাতাড়ি চড়থাপ্পড় দেওয়া হয়েছে। এ সময় তাঁর পাঞ্জাবির পকেটে থাকা ২০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে।

লালমনিরহাট সদর থানায় সোমবার রাতে আইয়ুব আলীর লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, ছাত্রলীগ নেতা রাশেদ জামানে নির্দেশে তাঁকে ধরে নিয়ে যাওয়া যুবকেরা জেলা শহরের ক্যানটিন মোড়ের ছাত্রলীগের সভাপতির ব্যক্তিগত চেম্বারে নিয়ে আবারও আইয়ুব আলীকে চড়থাপ্পড়, লাথি মারা হয়েছে। এ সময় আইয়ুব আলীর ছেলে তাঁর বাড়ি থেকে লালমনিরহাট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাশেদ জামান ওরফে বিলাশের চাওয়া চাঁদার ২ লাখ ২০ হাজার টাকা নিয়ে আসেন। ওই টাকা রাশেদ জামান নেওয়ার পর গরু ব্যবসায়ী আইয়ুব আলীকে সেখান থেকে বের করে দেন এবং আইনের আশ্রয় নেওয়া হলে তাঁকে প্রাণে শেষ করার হুমকি দেন।

লালমনিরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওমর ফারুক বলেন, ওই ব্যবসায়ীর দেওয়া লিখিত অভিযোগে তদন্তের দায়িত্ব সদর থানার এসআই তাজরুল ইসলামকে দেওয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

অভিযুক্ত রাশেদ জামান ওরফে বিলাশ লালমনিরহাট সরকারি কলেজে ঘটনার সময় উপস্থিত হওয়ার কথা স্বীকার করলেও কাউকে মারধর করে টাকা নেওয়ার সঙ্গে জড়িত নন বলে দাবি করেন।