জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শান্তির প্রতীক পায়রা নিয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রা
বাংলা নববর্ষকে স্বাগত জানিয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রা করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালযয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। আজ শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় অনুষদ ভবনের সামনে থেকে শোভাযাত্রাটি শুরু হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরের কয়েকটি সড়ক ঘুরে শোভাযাত্রাটি অমর একুশে ভাস্কর্যের পাদদেশে গিয়ে শেষ হয়।
এবারের বর্ষবরণের প্রতিপাদ্য ছিল ‘বরিষ ধরা-মাঝে শান্তির বারি’। শান্তির প্রতীক পায়রা নিয়ে শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করেছেন শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়া আবহমান বাংলার ঐতিহ্য মৃৎশিল্পের নিদর্শন হিসেবে টেপাপুতুলও ছিল শোভাযাত্রায়। সেই সঙ্গে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের হাতে ছিল প্যাঁচা, বাঘ, হাতি, ঘোড়ার আদলে তৈরি মুখোশ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থী খাদিজা লিমা বলেন, কবুতর শান্তির প্রতীক। দেশে দেশে যে হানাহানি, যুদ্ধবিগ্রহ, দারিদ্র্য, অসাম্য এসব বন্ধের লক্ষ্যে পায়রাকে শান্তির প্রতীক হিসেবে দেখানো হয়েছে। আর এ দেশের মানুষের সঙ্গে মাটির অনেক যোগসূত্র আছে। তাই মোটিফ হিসেবে পোড়া মাটির টেপাপুতুল দুটি বাংলা লোকশিল্পের ঐতিহ্য হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে।
তবে এবার রোজার ছুটি থাকার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে নববর্ষের আয়োজন ছিল স্বল্প পরিসরে। অন্যবার পাপেট শো এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের আয়োজনে মহুয়া চত্বরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হলেও এবার সেটি হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন বাংলা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক শামীমা সুলতানা। তিনি বলেন, ‘প্রতিবছরই বাংলা বিভাগের উদ্যোগে বর্ষবরণে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। তবে এ বছর রোজার ছুটিতে অনেক শিক্ষার্থী বাড়ি চলে গেছেন। শিক্ষার্থীরাই এই অনুষ্ঠানের প্রাণ। তাঁরা যেহেতু নেই তাই, এবার কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। গত বছর আমরা ঘরোয়া অনুষ্ঠান করেছিলাম। কিন্তু এ বছর রোজার শুরু থেকে ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় অনুষ্ঠান করা সম্ভব হয়নি।’
তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরোনো কলাভবনের ভেতরে ‘নববর্ষ হাট ১৪৩০’ নিয়ে বসেছেন চারুকলার একদল শিক্ষার্থী। সেখানে বিক্রি হচ্ছে নানা রঙের মুখোশ, নকশা করা মাটির সরা। এ ছাড়া কাগজে কাটা ফুল-পাখিও বিক্রি করছেন তাঁরা।
এর আগে মঙ্গল শোভাযাত্রা শেষে সেখানে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন উপাচার্য অধ্যাপক নুরুল আলম। তিনি বলেন, ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা বাঙালির কৃষ্টি ও ঐতিহ্যের অংশ। আমি সবাইকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। নতুন বছরে সবার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি। নববর্ষ সবার জীবনে বয়ে আসুক সুখ–শান্তি। আগামী বছর হয়ে উঠুক শান্তির এবং সম্প্রতির।’
মঙ্গল শোভাযাত্রায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ–উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মনজুরুল হক, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক রাশেদা আখতার, প্রাধ্যক্ষ কমিটির সভাপতি অধ্যাপক নাজমুল হাসান তালুকদার, ছাত্র–শিক্ষক কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক আলমগীর কবির, চুক্তিভিত্তিক রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজ প্রমুখ।