রূপগঞ্জে শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ, যৌথ বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে আহত ৫০
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে রবিনটেক্স বাংলাদেশ লিমিটেডে নামে একটি তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকদের সঙ্গে যৌথ বাহিনীর সংঘর্ষে অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন। আজ বুধবার দুপুরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের আউখাবো এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশের দাবি, ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে শ্রমিকেরা ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করেন। সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক করতে গেলে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান শ্রমিকেরা।
পুলিশ ও বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঈদের আগে মার্চ মাসের বেতন ও বোনাসের আংশিক পরিশোধ করে কারখানা বন্ধ ঘোষণা করে মালিকপক্ষ। এ সময় কিছু শ্রমিককে বিনা নোটিশে ছাঁটাইও করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার কারখানা খুলে দেওয়া হলে শ্রমিকেরা ছাঁটাই করা শ্রমিকদের কাজে ফেরত নেওয়াসহ বেশ কিছু দাবি জানান। মালিকপক্ষ দাবি মেনে না নিলে শ্রমিকেরা কাজে যোগ না দিয়ে কারখানার ভেতরে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। ছাঁটাই করা শ্রমিকদের কাজে ফেরত না নেওয়ায় আজ সকালে আবার কারখানার ভেতরে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকেরা। দুপুরে শ্রমিকেরা উত্তেজিত হয়ে কারখানার বাইরে আসার চেষ্টা করলে পুলিশ ও সেনাবাহিনী তাঁদের বাধা দেয়। একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা কারখানা থেকে বের হয়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করেন। তাঁরা সড়কের বিভিন্ন স্থানে আগুন জ্বালিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেন। এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা শ্রমিকদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে উভয় পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়।
মো. বিপ্লব নামের কারখানার এক শ্রমিক প্রথম আলোকে বলেন, ‘কারখানা কর্তৃপক্ষ বিনা নোটিশে শ্রমিক ছাঁটাই করেছে। মার্চ মাসের বেতন ও ঈদ বোনাস সম্পূর্ণ দেওয়া হয়নি। কিছু কিছু বিভাগে ৮ ঘণ্টার বদলে ১২ ঘণ্টায় হাজিরা ধরা হয়। আমরা এসব বিষয় সমাধানের জন্য শান্তিপূর্ণভাবে কারখানার ভেতর আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিলাম। দুপুরে বিনা উসকানিতে পুলিশ ও সেনাবাহিনী আমাদের ওপর লাঠিপেটা করে। এতে আমাদের ৩০ থেকে ৩৫ জন শ্রমিক আহত হয়েছেন। তাঁদের স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।’
জেলা পুলিশের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (গ-সার্কেল) মেহেদী ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, শ্রমিক ছাঁটাইসহ বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শ্রমিকেরা ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। এ সময় সড়কের উভয় পাশে দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়। যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে জেলা পুলিশ, শিল্প পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা শ্রমিকদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরানোর চেষ্টা করলে শ্রমিকেরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। এতে অন্তত ১৫ জন পুলিশ সদস্য ও সেনাবাহিনীর সদস্য আহত হন। পরে লাঠিপেটা করে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে অন্তত ১৫ জনকে আটক করা হয়েছে।
এ বিষয়ে কথা বলতে কারখানার দুজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও কারখানার ওয়েবসাইটে দেওয়া মুঠোফোন নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।