মিয়ানমার থেকে সেন্ট মার্টিনে গুলি করা হচ্ছে, সরকার কোনো কথা বলছে না: মির্জা ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘মিয়ানমার থেকে সেন্ট মার্টিনে গুলি করা হচ্ছে। অথচ দেখা যাচ্ছে, সরকার কোনো কথা বলছে না। সেন্ট মার্টিনে মিয়ানমারের যুদ্ধজাহাজও দেখা যাচ্ছে, এটা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের ওপর প্রচণ্ডভাবে হুমকি। আমরা মনে করি, এই সরকার একটা দুর্বল সরকার, মানুষের কোনো ম্যান্ডেটও নেই, এটা একটা নতজানু সরকার। বিদেশের ওপর নির্ভর করে এই সরকার টিকে আছে। যে কারণে তাদের নিয়ে একটা কথা বলতেও এই সরকার সাহস পায় না।’
আজ রোববার বেলা দেড়টার দিকে ঠাকুরগাঁও শহরের কালীবাড়ি এলাকার নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ কথা বলেন। এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সেন্ট মার্টিন এলাকায় সেনাবাহিনী মোতায়েনের বিষয়ে সরকার নির্ধারণ করবে। তারা এখন পর্যন্ত একটা স্টেটমেন্টও তো দেয়নি, সেখানে সেনাবাহিনী কী মোতায়েন করবে?’
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের দুর্নীতির কথা উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘যে সমস্ত কর্মকর্তা-কর্মচারী মনে করছেন তাঁরা আওয়ামী লীগকে সমর্থন করেন, লুটপাট করে টিকে থাকতে পারবেন, আল্টিমেটলি এসব করে টিকে থাকা যায় না। আজিজ-বেনজীর তার একটা প্রমাণ। দেখেন, ওই সরকারই তাঁদের বলির পাঁঠা বানিয়েছে।’
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘আজকে তো আবার পত্রিকায় দেখলাম, আগের ঢাকা ডিএমপির কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া, তাঁর বিশাল দুর্নীতির ফিরিস্তি বেরিয়েছে। এগুলো সব এক এক করে আসছে এখন। এখন থলের বিড়াল বেরিয়ে আসছে সব একটা একটা করে। আমরা বহুদিন ধরে বলছি এই সরকার বাস্তবিকভাবেই রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করছে, সরকারি কর্মকর্তাদের ব্যবহার করে তাঁদের চুরির সুযোগ করে দিয়েছে। এখন তাঁদের কর্মকাণ্ড সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। এখন সরকার কোনোভাবেই তাঁদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। সরকারের এই মুহূর্তে পদত্যাগ করা উচিত; কারণ, তারা রাষ্ট্র পরিচালনা করতে, শাসন করতে ব্যর্থ। তারা দুঃশাসন সৃষ্টি করেছে এবং ব্যর্থ হয়েছে রাষ্ট্র পরিচালনা করতে।’
সম্প্রতি বিএনপিতে নেতৃত্ব পরিবর্তন ইস্যুতে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আন্দোলন সাময়িকভাবে স্থবির হয়েছে সরকারের দমন-নিপীড়নের কারণে। এই আন্দোলন চলমান রয়েছে এবং আরও তীব্র হবে। আর একটা রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বে যে পরিবর্তন হয়, দলকে আরও শক্তিশালী করার জন্যই হয়। আমাদের এই পদগুলো শূন্য ছিল, অনেকেই মারা গেছেন, ওই জায়গাগুলো পূরণ করা হয়েছে। আর যাঁদের নেওয়া হয়েছে, তাঁরা তরুণ। আমরা অত্যন্ত আশাবাদী এই পরিবর্তনের ফলে আমাদের দল আরও বেশি শক্তিশালী হবে।’
এবারের কোরবানির ঈদে মানুষের আনন্দ নেই দাবি করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, দেশে মুদ্রাস্ফীতি যেভাবে বেড়েছে, তাতে নিত্যপণ্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। সেটা লক্ষ করা যাচ্ছে কোরবানির পশুর হাটে। দেশের মানুষ কোরবানির পশুও কিনতে পারছে না। এটার কারণটাই হচ্ছে মানুষের আর্থিক অবস্থা চরমভাবে খারাপ হয়ে গেছে। এই সরকার তো লুট করে দেশের সমস্ত সম্পদকে বিদেশে পাচার করে দিয়েছে। ব্যাংকগুলো শেষ করে দিয়েছে এবং অর্থনীতিকে চরমভাবে খারাপ অবস্থায় নিয়ে এসেছে। কয়েক দিন আগে আপনারা দেখেছেন দেশের প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদেরা বলেছেন, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা অত্যন্ত খারাপ-নাজুক।
এ সময় ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুল হালিম, সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমীন, পৌর বিএনপির সভাপতি শরিফুল ইসলামসহ বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।