অটোরিকশায় ওঠার পর নারীকে তুলে নিয়ে দল বেঁধে ধর্ষণ, ছেলের গলায় ধরা হয় ছুরি
সাত বছরের ছেলেকে নিয়ে ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার শ্বশুরবাড়ি থেকে হরিপুরে বোনের বাড়িতে যাচ্ছিলেন এক গৃহবধূ (৩২)। পথে হরিপুর উপজেলার কামারপুকুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ব্যাটারিচালিত একটি ইজিবাইকের চালক তাঁর কাছে গন্তব্যের কথা জানতে চান। তিনি গন্তব্যের কথা বললে তাঁকে তুলে নেন চালক।
ওই সময়ে ইজিবাইকে আরও চারজন যাত্রী ছিলেন। কিছুদূর যাওয়ার পর তাঁরা ওই গৃহবধূ ও তাঁর ছেলেকে জোর করে বকুয়া ইউনিয়নের চাপধাবাজার এলাকার একটি আমবাগানে নিয়ে যান। ওই সময় গৃহবধূ ধস্তাধস্তি করলে ছেলের গলায় ছুরি ধরে হত্যার ভয় দেখিয়ে চুপ থাকতে বলা হয়। পরে সেখানে ওই গৃহবধূকে দল বেঁধে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শুক্রবার সন্ধ্যার পর এ ঘটনায় ওই দিন রাত ১২টার দিকে ওই গৃহবধূকে রাস্তার পাশে ফেলে পালিয়ে যাওয়ার সময় ফজলুর রহমান নামের এক তরুণকে আটক করেন স্থানীয় লোকজন। পরে তাঁরা ঘটনাটি জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ জানান। হরিপুর থানার পুলিশ এসে ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করে। এরপর ফজলুর রহমানের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী রাতে অভিযান চালিয়ে রিসাদ ও আকাশ নামের দুজনকে আটক করা হয়।
এ ঘটনায় ওই গৃহবধূ বাদী হয়ে পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে শনিবার সকালে হরিপুর থানায় মামলা করেন। মামলায় হরিপুর উপজেলার বকুয়া ইউনিয়নের চাপধা হাটপুকুর গ্রামের সলেমান আলীর ছেলে ফজলুর রহমান, চাপধা পিপলা গ্রামের করিমুল ইসলামের ছেলে রিসাদ, একই এলাকার গুচ্ছগ্রামের শাহজাহান আলীর ছেলে আকাশ, রকিম ও লস্করকে আসামি করা হয়েছে।
শনিবার দুপুরে ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতালে ওই গৃহবধূর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। পরে তাঁকে তাঁর বাবার বাড়ি বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় নিয়ে যান স্বজনেরা।
রোববার দুপুরে ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির বাইরে একটি ভ্যান দাঁড়িয়ে আছে। ওই সময় অচেনা লোকজন দেখে ওই গৃহবধূ ঘরের ভেতরে চলে যান। পরে তাঁর ভাই প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর থেকে অনেকেই তাঁদের বাড়িতে আসছেন। এতে তাঁরা বিব্রত হচ্ছেন। তাঁর বোনও মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।
ঘটনার পর থেকে ওই গৃহবধূ কান্নাকাটি করছেন জানিয়ে তাঁর ভাই আরও বলেন, ধর্ষণ না করার জন্য হাত-পা ধরে নির্যাতনকারীদের কাছে অনুরোধ করেছিলেন তাঁর বোন। একপর্যায়ে ছেলের গলায় ছুরি ধরে তাঁকে চার-পাঁচজন মিলে ধর্ষণ করেন।
জানতে চাইলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হরিপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আনোয়ার হোসেন বলেন, অভিযুক্ত পাঁচ আসামির মধ্যে তিনজনকে শনিবার গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে রাতে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন তাঁরা। এরপর তাঁদের কারাগারের পাঠানো হয়। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।