শরীয়তপুরে অনুমোদনহীন চিড়িয়াখানায় অভিযান, বিভিন্ন প্রজাতির ৩১ প্রাণী উদ্ধার

অনুমোদনহীন ছোট চিড়িয়াখানায় অভিযান চালিয়ে ৩১টি প্রাণী উদ্ধার করা হয়েছে। রোববার শরীয়তপুরের নড়িয়ার কলুকাঠি এলাকায়ছবি: প্রথম আলো

শরীয়তপুরের নড়িয়ার কলুকাঠি এলাকায় মডার্ন ফ্যান্টাসি কিংডম নামে শিশুপার্ক ও পিকনিক স্পটের মধ্যে স্থাপিত অনুমোদনহীন মিনি চিড়িয়াখানায় অভিযান চালানো হয়েছে। অভিযানে চিড়িয়াখানা থেকে ১০ প্রজাতির ৩১টি বন্য প্রাণী উদ্ধার করা হয়েছে। আজ রোববার বন অধিদপ্তরের বন্য প্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের একটি দল এ অভিযান চালায়।

বন অধিদপ্তর ও মডার্ন ফ্যান্টাসি কিংডম সূত্রে জানা যায়, নড়িয়া উপজেলার কলুকাঠি এলাকায় পদ্মা নদীর তীরে ২০০৫ সালে মডার্ন ফ্যান্টাসি কিংডম এবং মিনি চিড়িয়াখানা স্থাপন করেন ব্যবসায়ী ও চিকিৎসক আলগীর মতি। মডার্ন ফ্যান্টাসি কিংডম ও পার্কের অনুমোদন আছে। কিন্তু বিনোদন পার্কের ভেতরে স্থাপিত ছোট চিড়িয়াখানাটি পরিচালনার জন্য কোনো অনুমোদন নেই। একটি সংবাদের ভিত্তিতে বন অধিদপ্তরের বন্য প্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট আজ সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে ১টি ভাল্লুক, ১টি মিঠা পানির কুমির, ১টি বার্মিজ অজগর, ৮টি শজারু, ১টি মেছো বিড়াল, ২টি বনবিড়াল, ২টি কালিম পাখি, ১০টি ঘুঘু, ২টি টিয়া, ৩টি বালিহাঁস উদ্ধার করেছে। এর মধ্যে অভিযান পরিচালনা করা দলটি পাখিগুলো অবমুক্ত করে দিয়েছে। অন্যান্য বন্য প্রাণীগুলো ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। প্রাণীগুলোকে কয়েক দিন ঢাকায় রেখে চিকিৎসা দেওয়া হবে। এরপর গাজীপুর সাফারি পার্কে দেওয়া হবে।

মডার্ন ফ্যান্টাসি কিংডমের ব্যবস্থাপক নজরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাংলাদেশের অনেক স্থানে ছোট চিড়িয়াখানা চালু আছে। সরকারের কোনো পর্যায় থেকে ওই চিড়িয়াখানা চালানোর অনুমতি দেওয়া হয় না। তাই আমরাও চিড়িয়াখানা চালানোর জন্য কোনো অনুমতি নিইনি। গত ২০ বছরে কখনো বাধার মুখে পড়িনি। এখন যেহেতু বাধা পেয়েছি, তাই এটা আর চালানো হবে না। বন অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের বন্য প্রাণীগুলো দিয়ে দেওয়া হয়েছে।’

বন অধিদপ্তরের বন্য প্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা রথীন্দ্র কুমার বিশ্বাস প্রথম আলোকে বলেন, বন্য প্রাণী আইন-২০১২ অনুযায়ী, বন্য প্রাণী সংগ্রহ, দখলে রাখা, প্রদর্শন ও সংরক্ষণ করা দণ্ডনীয় অপরাধ। অনুমতি ছাড়া বিভিন্ন ধরনের দেশীয় বন্য প্রাণী মিনি চিড়িয়াখানায় রাখা হয়েছে। তাই অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন প্রজাতির ৩১টি বন্য প্রাণী উদ্ধার করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে মুচলেকা দেওয়া হয়েছে, তারা আর কখনো বন্য প্রাণী সংরক্ষণ ও প্রদর্শন করবে না। তাই তাদের বিরুদ্ধে কোনো আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।