নাটোরের সিংড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চেয়ারম্যান প্রার্থী দেলোয়ার হোসেনকে অপহরণ ও মারধরের ঘটনায় অভিযুক্ত প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লুৎফুল হাবীবকে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছে উপজেলা আওয়ামী লীগ। অন্যথায় তাঁর পক্ষে আওয়ামী লীগের কেউ নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেবেন না।
আজ শনিবার সন্ধ্যায় উপজেলা আওয়ামী লীগের জরুরি বর্ধিত সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। একই সঙ্গে অপহরণের ঘটনায় জড়িত দল ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদের বহিষ্কারের জন্য কেন্দ্রীয় নেতাদের চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
সভা শেষে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ওহিদুর রহমান শেখ ওই প্রার্থীকে ফোন করে দলীয় সিদ্ধান্তের বিষয়টি জানিয়ে দেন। এর আগে গতকাল শুক্রবার বিকেলে তাঁকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছিল উপজেলা আওয়ামী লীগ।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ওহিদুর রহমান শেখ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছার কথাটা লুৎফুল হাবীবকে জানিয়ে দিয়েছি। তিনি (লুৎফুল হাবীব) সেটা না মানলে দল কী করবে, তা-ও জানিয়ে দিয়েছি। তিনি দলীয় সিদ্ধান্তের ব্যাপারে কী করা যায়, ভেবে দেখবেন বলে জানিয়েছেন।’
স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ সন্ধ্যায় সিংড়া পৌর ভবনে উপজেলা আওয়ামী লীগের জরুরি বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রার্থী মনোনয়নের ব্যাপারে দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সর্বশেষ সিদ্ধান্ত অনুসরণ করার ব্যাপারে মতামত দেন। সবার মতামতের ভিত্তিতে সভা শেষে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ওহিদুর রহমান শেখ প্রার্থী লুৎফুল হাবীবকে ফোন করে তাঁর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের অনুরোধ করেন। সভার সিদ্ধান্ত না মানলে উপজেলা আওয়ামী লীগ তাঁর নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেবে না বলেও জানিয়ে দেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, বর্ধিত সভায় অপহরণের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সহযোগী সংগঠনের নেতাদের বহিষ্কারের কেন্দ্রীয় নেতাদের চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আজ রেজল্যুশন লেখার পর আগামীকাল রোববার সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে পাঠানো হবে।
এদিকে অপহরণের কাজে ব্যবহৃত কালো রঙের হায়েস মাইক্রোবাসটি জব্দ করেছে পুলিশ। আজ সন্ধ্যায় সিংড়ার শেরকোল ইউনিয়নের দুর্গম চকপুর গ্রামের আতাউর রহমানের বাড়ি থেকে মাইক্রোবাসটি জব্দ করা হয়। এ সময় আতাউর রহমানকেও গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গত সোমবার পাঁচ ঘণ্টার ব্যবধানে সিংড়া উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী দেলোয়ার হোসেন ও তাঁর ভাইসহ এক আওয়ামী লীগ নেতাকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের সামনে থেকে অপহরণ ও মারধর করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজ ও গ্রেপ্তার এক আসামির আদালতে দেওয়া ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী লুৎফুল হাবীবের ঘনিষ্ঠজনদের সম্পৃক্ততার তথ্য উঠে আসে। দেশব্যাপী বিষয়টি আলোচিত হয়।