চট্টগ্রামের বিনোদনকেন্দ্রে উপচে পড়া ভিড়

ফয়’স লেকের সি ওয়ার্ল্ডে আনন্দে মেতেছেন বিভিন্ন বয়সীরা। চট্টগ্রাম, ০১ এপ্রিলছবি: সৌরভ দাশ

ঈদের ছুটিতে চট্টগ্রামের বিনোদনকেন্দ্রগুলোতে ছিল দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড়। মঙ্গলবার সকাল থেকে নগর ও এর আশপাশের এলাকা থেকে মানুষ পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসেন। তাদের মধ্যে শিশু-কিশোরদের সরব উপস্থিতি ছিল।

চট্টগ্রামে দর্শনার্থীদের আগ্রহের শীর্ষে ছিল চিড়িয়াখানা, ফয়’স লেক, পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত। গত বছরের মাঝামাঝি সময় থেকে নগরের তিনটি পার্ক বন্ধ হয়ে যায়। এতে চালু থাকা বিনোদনকেন্দ্রগুলোতে চাপ বেড়েছে।

ঈদের দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় ২০ হাজারের বেশি মানুষ ঘুরতে আসেন। চট্টগ্রাম, ০১ এপ্রিল
ছবি: সৌরভ দাশ

চিড়িয়াখানায় ঘোরাঘুরি

ঈদের দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় ২০ হাজারের বেশি মানুষ ঘুরতে আসেন। ঈদের দিন দর্শনার্থী এসেছিলেন ১৫ হাজার।

চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থীদের বেশি আগ্রহ ছিল বাঘ, সিংহ, হরিণ, বানর নিয়ে। এসব প্রাণীর খাঁচার সামনে দর্শনার্থীদের ভিড় লেগেই ছিল। পশুপাখি দেখতে শিশু-কিশোরদের আগ্রহই বেশি চোখে পড়েছে।

চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার ডেপুটি কিউরেটর শাহাদাত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, এবার ঈদের দিন থেকেই দর্শনার্থীদের চাপ ছিল। দুই দিনে ৩৫ হাজারের বেশি মানুষ ঘুরতে এসেছেন। ঈদের ছুটি এখনো শেষ হয়নি। আশা করছেন আগামী দু-তিন দিন এই ভিড় থাকবে।

কয়েক বছর ধরে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা নিয়ে মানুষের আগ্রহ জন্মেছে বলে জানালেন শাহাদাত হোসেন। এর কারণ আগের চেয়ে এখানে বাঘের সংখ্যা বেড়েছে। পশুপাখির বৈচিত্র্যও বৃদ্ধি পেয়েছে।

নগরের সরাইপাড়া থেকে ছেলে আরিয়ানকে নিয়ে চিড়িয়াখানায় ঘুরতে এসেছেন শিউলি আক্তার। তিনি বলেন, বাঘ, সিংহ নিয়ে ছেলের আগ্রহ আছে টিভিতে, কার্টুনে দেখে। এবার সরাসরি দেখাতে নিয়ে এসেছেন। চিড়িয়াখানার পরিবেশও চমৎকার। যদিও মানুষের ভিড় বেশি।

বন্ধুরা দলবেঁধে সি ওয়ার্ল্ডে আনন্দ-উল্লাসে মেতেছে। চট্টগ্রাম, ০১ এপ্রিল
ছবি: সৌরভ দাশ

ফয়’স লেকে আনন্দ

চিড়িয়াখানার পাশেই রয়েছে ফয়’স লেক। সেখানেও দর্শনার্থীদের ভিড় লেগে ছিল। এখানে তিনটি অংশ রয়েছে—ফয়’স লেক কনকর্ড অ্যামিউজমেন্ট, সি ওয়ার্ল্ড ও বেস ক্যাম্প। সবখানে মানুষের সরব উপস্থিতি।

মঙ্গলবার বিকেলে দেখা যায়, সি ওয়ার্ল্ডের সুইমিং পুলে শত শত মানুষ আনন্দে মেতেছেন। নানা বয়সী মানুষ মেতে উঠেছেন জলকেলিতে। পার্কের রাইডগুলোতেও চড়ে বসেছে অনেক শিশু-কিশোর।

ফয়’স লেক কমপ্লেক্সের পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান কনকর্ডের ব্যবস্থাপক (বিপণন) বিশ্বজিৎ ঘোষ প্রথম আলোকে বলেন, এবার নতুন করে ছয়টি রাইড যুক্ত করা হয়েছে। এতে মানুষের আগ্রহ বেড়েছ। মানুষের ভিড় ছিল সন্তোষজনক।

মা-বাবার সঙ্গে শিশুরাও পানিতে নেমে আনন্দে মেতেছে। চট্টগ্রাম, ০১ এপ্রিল
ছবি: সৌরভ দাশ

পরিবার নিয়ে ফয়’স লেকে ঘুরতে এসেছেন নগরের একটি হোটেলে কর্মরত মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম। তিনি বলেন, ঈদের দিন গ্রামের বাড়িতেই সময় কাটিয়েছেন। তাই সময় থাকায় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে চলে এসেছেন। শিশুরা খুব খুশি হয়েছে এখানে ঘুরতে এসে।

ডালিয়া আক্তার প্রতিবছর ছেলে-মেয়েদের নিয়ে ঈদের ছুটিতে ফয়’স লেকে ঘুরতে আসেন। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তিনি বলেন, শহরে সন্তানদের নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার জায়গা খুব কম। এখানকার পরিবেশ খুব চমৎকার। নানা ধরনের রাইড রয়েছে। লেক আছে। নৌকায় করে ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ রয়েছে। তাই বারবার ঘুরতে আসেন।

নতুন বিনোদনকেন্দ্রেও ভিড়

নগরের পরিচিত বিনোদনকেন্দ্রের বাইরেও সম্প্রতি ঘুরে বেড়ানোর জায়গা তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বায়েজিদ সংযোগ সড়ক, বাকলিয়ায় কর্ণফুলী নদীর তীর, ফৌজদারহাটে ডিসি পার্ক। এসব জায়গায় শত শত মানুষ ঈদের ছুটিতে পরিবারসহ ঘুরতে এসেছেন।