গাইবান্ধা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ছাবিউল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মো. নিজাম উদ্দিনের সই করা প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়।
মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে গাইবান্ধা এলজিইডি কার্যালয় থেকে প্রজ্ঞাপনের বিষয়টি জানাজানি হয়। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, নির্বাহী প্রকৌশলী ছাবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষের অনুমতি না নিয়ে কর্মস্থল ত্যাগ করার অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া গাড়িতে অবৈধ অর্থ বহন ও তা যৌথ বাহিনী কর্তৃক জব্দ করার বিষয়টি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। নির্বাহী প্রকৌশলী ছাবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর বিধি ৩ (খ) ও (ঘ) অনুসারে অসদাচরণ ও দুর্নীতির অভিযোগে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়। ২০১৮ এর বিধি ১২ (১) অনুসারে তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো। সাময়িক বরখাস্তকালীন তিনি খোরপোশ ভাতা পাবেন।
সাময়িক বরখাস্তের বিষয়ে জানতে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টায় ছাবিউল ইসলামের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ধরেননি।
প্রসঙ্গত, যৌথ বাহিনীর সদস্যরা গত বৃহস্পতিবার রাতে নাটোর–বগুড়া মহাসড়কে যানবাহনে তল্লাশি করছিলেন। দিবাগত রাত দুইটার দিকে বগুড়া থেকে নাটোর অভিমুখে একটি ব্যক্তিগত গাড়ি থামিয়ে তল্লাশির সময় গাড়ির পেছনের ডালায় বিপুল পরিমাণ টাকা দেখতে পান তাঁরা। এ সময় গাড়িতে থাকা আরোহী ছাবিউল ইসলাম নিজেকে গাইবান্ধার এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী পরিচয় দেন। পরে তাঁকে ও গাড়ির চালককে সিংড়া থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
তদন্তকারী কর্মকর্তা তলব করামাত্র হাজির হবেন, এমন শর্তে শুক্রবার সন্ধ্যায় মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পান ছাবিউল ইসলাম। এ সময় তিনি ওই টাকা তাঁর জমি বিক্রির টাকা বলে দাবি করেন। তবে এর সমর্থনে ছাবিউল কোনো প্রমাণ দিতে না পারায় পুলিশ ওই টাকা ও টাকা বহনকারী গাড়িটি জব্দ করে। ওই টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন নাটোরের সিংড়া আমলি আদালত।
গাইবান্ধা এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, ২০০৫ সালের ২১ ডিসেম্বর সাঘাটা উপজেলা প্রকৌশলী হিসেবে গাইবান্ধা জেলায় এসেছিলেন মো. ছাবিউল ইসলাম। সবশেষ তিনি গাইবান্ধা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলীর দায়িত্বে ছিলেন। ২১ বছর ধরে তিনি গাইবান্ধা জেলাতেই কর্মরত। মাঝখানে তাঁকে বরিশালে বদলি করা হলেও ২৩ দিনের মাথায় আবারও গাইবান্ধায় চলে আসেন। সরকারি চাকরিবিধি অনুযায়ী, একজন সরকারি কর্মকর্তা একই কর্মস্থলে টানা তিন বছরের বেশি থাকার কথা নয়।