হালদায় আবারও ভেসে উঠল মরা মা কাতল মাছ
দেশের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ হালদা নদীতে এবার আরেকটি মরা মা কাতল মাছ ভেসে উঠেছে। নদী থেকে ১০ কেজি ৭০০ গ্রাম ওজনের মরা মাছটি উদ্ধার করেন স্বেচ্ছাসেবকেরা। আজ বুধবার সকাল ১০টার দিকে নদীর চট্টগ্রামের রাউজান অংশের গহিরা মোবারকখিল সোনাইর মুখ স্লুইসগেট এলাকার শাখা খাল থেকে মাছটি উদ্ধার করা হয়। মাছটি লম্বায় তিন ফুট।
এ নিয়ে গত দুই মাসে হালদা নদী থেকে মোট সাতটি মরা মা কাতল মাছ উদ্ধার করা হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা, নদীর স্বেচ্ছাসেবক ও স্থানীয় মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ সকালে হালদা নদীর শাখা খালে মাছটি ভাসতে দেখে স্থানীয় লোকজন মৎস্য বিভাগের লোকজনকে খবর দেন। পরে স্বেচ্ছাসেবক ও মৎস্য অধিদপ্তরের লোকজন এসে দুপুরে মাছটি নদী পাড়ে মাটি চাপা দেন।
নদীর প্রবীণ ডিম সংগ্রহকারী কামাল সওদাগর প্রথম আলোকে বলেন, খবর পেয়ে তাঁরা মরা মা মাছটি উদ্ধার করেন। কিছুটা পচে যাওয়ায় প্রশাসনের নির্দেশে তাঁরা সেটি মাটি চাপা দেন।
এর আগে গত ২৬ জুলাই নদীটির রাউজান ও হাটহাজারীর তিন স্থান থেকে তিনটি মরা মা কাতল মাছ উদ্ধার করা হয়েছিল। ২৫ জুলাই নদীর রাউজানের পশ্চিম গুজরা ইউনিয়নের কাগতিয়া স্লুইসগেট এলাকায় ৯ কেজি ১০০ গ্রাম ওজনের আরেকটি মরা মা কাতল মাছ উদ্ধার করেন স্থানীয় লোকজন।
৪ জুন রাউজানের উরকিরচর বাকর আলী চৌধুরী ঘাট এলাকা থেকে একটি মরা মা কাতল মাছ উদ্ধার করেন স্থানীয় লোকজন। ১ জুন হাটহাজারী উত্তর মাদার্শা ইউনিয়নের বাড়িঘোনা ঘাট এলাকা থেকেও একটি মরা মা কাতল মাছ উদ্ধার হয়। সেটি ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাকেন্দ্র হালদা রিসার্চ অ্যান্ড ল্যাবরেটরি সেন্টারে পাঠানো হয়েছিল।
এত কম সময়ে একের পর এক মা মাছ মারা যাওয়ার ঘটনায় চরম উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠা প্রকাশ করেছেন হালদা গবেষকেরা। তাঁরা মনে করেন, এ রকম একের পর এক মা মাছ ও ডলফিন মারা গেলে হালদার প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন উৎস হারানোর শঙ্কা তৈরি হতে পারে।
এসব মাছ মারা যাওয়ার কারণ হিসেবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান ও হালদা গবেষক মো. মনজুরুল কিবরীয়া প্রথম আলোকে বলেন, নদীতে কেউ বিষ ছড়িয়ে এসব ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে। একই কারণে নদীতে মাসে একাধিকবার অতি বিপন্নপ্রায় ডলফিনও ভেসে আসছে। মাছ মারা যাওয়ার ঘটনাটি বেশ উদ্বেগজনক।
রাউজান ও হাটহাজারীর মৎস্য অধিদপ্তরের দায়িত্বে থাকা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা পিযুষ প্রভাকর বলেন, আজ নদীর শাখা খালে মরে ভেসে ওঠা মা মাছটি পচে যাওয়ায় মাটি চাপা দেওয়া হয়েছে নদী পাড়ে।