ঢাকায় গুলিবিদ্ধ পোশাক কর্মীর রংপুরে মৃত্যু

মিরাজ খান

রাজধানী ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে গত সোমবার গুলি পেটে বিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত মিরাজ খান (১৮) রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ বৃহস্পতিবার মারা গেছেন।

নিহত মিরাজ খান ঢাকায় পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। তিনি লালমনিরহাটের আদিতমারীর মহিষখোঁচার খানপাড়া এলাকার আব্দুস সালামের ছেলে।

এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা ও মিরাজের পরিবার সূত্রে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সূচনা হলে যাত্রাবাড়ীতে কোটাবিরোধী আন্দোলনের মিছিলে অংশ নেন তিনি। একপর্যায়ে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার পর মিছিলে দুর্বৃত্তদের গুলিতে গুরুতরভাবে আহত হন মিরাজ। তাঁর আহত হওয়ার খবর পেয়ে পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়স্বজনেরা ঢাকার হাসপাতাল ও ক্লিনিকে অপারেশন করানোর জোর চেষ্টা করেও চিকিৎসকের দেখা না পেয়ে একপর্যায়ে তাঁকে গুরুতর আহত অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসেন। সেখানে গত বুধবার অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়। এখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরে আজ দুপুরে তাঁর মৃত্যু হয়।

মিরাজের লাশ তাঁর গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসা হয়েছে। তাঁর লাশ দেখে পুরো গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে, পরিবারে চলছে শোকের মাতম।

আদিতমারীর মহিষখোঁচা বহুমুখী স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ শরওয়ার আলম বলেন, ‘মিরাজ খান এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়। পরে সে কলেজে ভর্তি হলেও পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারেনি। মিরাজ ঢাকায় পোশাক কারখানায় চাকরি করতে গিয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত হয়ে যায়। শুনেছি ৫ আগস্ট ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে গুলিবিদ্ধ হয়। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।’

আদিতমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদ উন নবী বলেন, ‘মিরাজ খান নামের এক যুবক ঢাকায় ৫ আগষ্ট গুলিবিদ্ধ হয়ে রংপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর সংবাদ পেয়েছি।’ তিনি আর কিছু বলতে রাজি হননি।

আজ বিকেলে আদিতমারীর মহিষখোঁচা বহুমুখী স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে মিরাজের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। পরে তাঁকে তাঁর নিজ গ্রামের কবরস্থানে দাফন করা হয়।