শিক্ষার্থীদের মননশীলতা আর রঙের বর্ণিল ছটায় মূর্ত হয়ে উঠেছিল বাঙালির গৌরবের মহান ভাষা আন্দোলন; মুক্তিযুদ্ধ; স্বাধীন বাংলাদেশের অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রা; আবহমান বাংলাদেশের সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক অগ্রগতি; রূপকল্প-২১ থেকে ৪১ এবং বদ্বীপ পরিকল্পনা-২১০০। এসব দৃশ্যকল্প দেখতে আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে উপস্থিত হন হাজারো শিক্ষার্থী। তাঁদের পদচারণে দিনভর মুখর ছিল কীর্তনখোলাতীরের এ ক্যাম্পাস।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিব বর্ষ উদ্যাপনের ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজন করা হয় দেয়ালিকা প্রদর্শনী। চলে সন্ধ্যা অবধি। বিকেলে আয়োজন করা হয় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক কুইজ প্রতিযোগিতা। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন-১-এর নিচতলায় হওয়া দেয়ালিকা প্রদর্শনীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৪টি বিভাগ অংশ নেয়।
দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র আয়োজিত এ প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন উপাচার্য মো. ছাদেকুল আরেফিন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপাচার্য বলেন, দেয়ালিকা প্রদর্শনীর উদ্দেশ্য বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার আবর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবনী শক্তির বহিঃপ্রকাশ ঘটানো। সে আলোকে প্রতিটি বিভাগের শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারা দেশের তরুণ প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সম্প্রসারণে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
ছাদেকুল আরেফিন আরও বলেন, এ ধরনের আয়োজন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহশিক্ষা কার্যক্রম আরও বেগবান করবে এবং এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ সম্পর্কে আরও বেশি জানার সুযোগ তৈরি হবে।
ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের পরিচালক জ্যোতির্ময় বিশ্বাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, প্রভোস্ট, বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকসহ শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। উদ্বোধন শেষে উপাচার্যসহ অতিথিরা দেয়ালিকা প্রদর্শনী ঘুরে দেখেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী নিতু সাহা ও জেবুন্নেছা তারানা বলেন, ‘আমরা জয় বাংলা শিরোনামে দেয়ালিকা তৈরি করেছি। এতে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণ, মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের পর বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বিজয়োল্লাসসহ ঐতিহাসিক নানা দিক তুলে ধরা হয়েছে।’
জেবুন্নেছা তারানা বলেন, প্রথাগত শিক্ষার পাশাপাশি এ ধরনের সহশিক্ষা কার্যক্রম তাঁদের ইতিহাস-ঐতিহ্য সম্পর্কে জানতে সাহায্য করে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা বিকাশে সাহায্য করবে। দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে এটাই সবচেয়ে বড় দেয়ালিকা উৎসবের আয়োজন বলে তিনি মনে করেন। সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এটা হওয়া উচিত।
বঙ্গ থেকে বাংলাদেশ, ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, বাংলাদেশের অগ্রগতি ইত্যাদি বিষয় উপজীব্য করে তৈরি করা এসব দেয়ালিকা দেখতে ভিড় করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।