নেত্রকোনায় ২০ মিনিটের বৃষ্টি, কৃষকের মুখে হাসি

হাওরাঞ্চল নেত্রকোনার খালিয়াজুরির দুটি ইউনিয়নে শিলা ও হালকা ঝোড়ো বৃষ্টি হয়েছে। রোববার দুপুরে
ছবি: সংগৃহীত

নেত্রকোনায় ২০ মিনিটের মতো বৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে হাওরাঞ্চল খালিয়াজুরির দুটি ইউনিয়নে ১৫ মিনিট শিলা ও হালকা বৃষ্টি হয়েছে। রোববার দুপুর ১২টা ৮ মিনিট থেকে শুরু হয় এই বৃষ্টি। পরে বৃষ্টির সঙ্গে ঝড়তে থাকে শিলা। বিভিন্ন এলাকায় শিলায় ঢেকে যায় মাটি। বসন্তের প্রথম সময়ে এমন বৃষ্টি এর আগে দেখেননি বলে মন্তব্য করেছেন খালিয়াজুরির অনেকে।

স্থানীয় বাসিন্দা ও জেলা আবহাওয়া কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সকাল ১০টা থেকে নেত্রকোনায় বিভিন্ন এলাকায় আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হয়ে যায়। এরপর দুপুর ১২টা ৮ মিনিটে হঠাৎ করে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়। একপর্যায়ে মুষলধারে বৃষ্টি হয়। এর মধ্যে হাওর দ্বীপখ্যাত খালিয়াজুরি উপজেলার চাকুয়া ও গাজীপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় ১৫ মিনিট সময়ব্যাপী শিলাবৃষ্টি শুরু হয়। এরপর শিলা থামলেও কিছু সময় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি অব্যাহত ছিল। সঙ্গে দমকা হাওয়া।

উপজেলার শ্যামপুর এলাকার বাসিন্দা নেত্রকোনা সোনালী ব্যাংকের জ্যেষ্ঠ প্রধান কর্মকর্তা নিরাময় সরকার দাপ্তরিক কাজে খালিয়াজুরি শাখায় গিয়েছিলেন। মুঠোফোনে প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘রোববার দুপুরে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হয়ে হঠাৎ করে বৃষ্টি শুরু হয়। এর মধ্যে চাকুয়া ইউনিয়নের দাউদপুর ও মুকিমপুর গ্রামে প্রচুর শিলাবৃষ্টি হয়। শিলাবৃষ্টি হলেও ফসলের তেমন ক্ষতি হয়নি। তবে বেশ কিছু ঘরবাড়ির ক্ষতি হয়েছে। ফাল্গুন মাসে এ রকম শিলাবৃষ্টি আমরা আগে কখনো দেখিনি।’

পুরানহাটি গ্রামের কৃষক শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টি হয়েছে। এখন হাওরে বোরো ধান আবাদ চলছে। এই বৃষ্টি অনেক উপকারে আসবে। হাওর–অধ্যুষিত নেত্রকোনার প্রধান ফসল ধানের জন্য এই বৃষ্টিতে আমাদের কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে।’ সদর উপজেলার কুমরি এলাকার বাসিন্দা সোহাগ ফকির বলেন, ‘অল্প সময় হলেও ভালো বৃষ্টি হয়েছে। বোরো খেতে আমাদের প্রচুর পরিমাণে পানি প্রয়োজন পড়ে। এই বৃষ্টির ফলে কিছুটা পানির প্রয়োজনীয়তা কমবে। গভীর নলকূপের মাধ্যমে দেওয়া পানি ধানগাছের গোড়ালি ভেজালেও বৃষ্টির পানিতে পুরো ধানগাছ পানি শোষণ করার সুযোগ পাবে।’

নেত্রকোনা আবহাওয়া কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মামুন জানান, এ বৃষ্টি সোমবারও হতে পারে। তবে দীর্ঘ সময় ধরে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা আপাতত নেই।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নেত্রকোনা কার্যালয়ের উপপরিচালক মোহাম্মদ নুরুজ্জামান বলেন, জেলার প্রায় সব উপজেলাতেই বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হয়েছে। তবে খালিয়াজুরির কিছু এলাকায় শিলাবৃষ্টি হয়। এ সময়ের বৃষ্টি সব ফসলের জন্য উপকারী। বিশেষ করে বোরো ধান চাষে পর্যাপ্ত পানি প্রয়োজন। বৃষ্টি হওয়ায় ফসলের জমিতে সেচের পরিমাণ কিছুটা কম লাগবে। এ বছর জেলায় বোরো আবাদ করা হয় ১ লাখ ৮৫ হাজার ৪৬০ হেক্টর। ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ১২ লাখ ৬৩ হাজার ৪৯০ দশমিক ৫ টন।