চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিক মারধরে জড়িতদের শাস্তি চেয়ে মানববন্ধন, উপাচার্যের আশ্বাস

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সাংবাদিককে ছাত্রলীগের মারধরের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি। আজ মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে
ছবি: প্রথম আলো

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিককে মারধরের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (চবিসাস)। আজ মঙ্গলবার বেলা দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ মানববন্ধন হয়। মানববন্ধন শেষে উপাচার্যকে একটি স্মারকলিপি দেন সমিতির নেতারা। মারধরের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের স্থায়ী বহিষ্কারের আশ্বাস দিয়েছেন উপাচার্য।

এর আগে গতকাল সোমবার রাত ৯টার দিকে চায়ের দোকানে বসাকে কেন্দ্র করে এক সাংবাদিককে মারধরের অভিযোগ পাওয়া যায় ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। মারধরের শিকার ওই সাংবাদিকের নাম দোস্ত মোহাম্মদ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতির সদস্য ও একটি অনলাইন পোর্টালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত। অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের মধ্যে দুই নেতার পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। তাঁরা হলেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের আইন সম্পাদক খালেদ মাসুদ ও উপদপ্তর সম্পাদক আরাফাত রায়হান। মারধরের প্রতিবাদে আজ মঙ্গলবার সকালে বিবৃতি দেন সাংবাদিক সমিতির নেতারা।

মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মাহবুব এ রহমান। প্রচার, প্রকাশনা ও দপ্তর সম্পাদক মোহাম্মদ আজহারের সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য দেন চবিসাসের সাবেক সভাপতি সৈয়দ বাইজিদ, ইমরান হোসাইন, সাধারণ সম্পাদক ইমাম ইমু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইফতেখারুল ইসলাম, নবাব আবদুর রহমান, সমিতির সদস্য মারজান আক্তার, নূর নওশাদ প্রমুখ।

মারধরে জড়িত ছাত্রলীগ কর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ২৪ ঘণ্টার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন সাংবাদিক সমিতির নেতারা
ছবি: প্রথম আলো

মারধরে জড়িত ছাত্রলীগ কর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ২৪ ঘণ্টার সময়সীমা বেঁধে দিয়ে সমিতির সভাপতি মাহবুব এ রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার ঘটনা নতুন নয়। বিচারহীনতার সংস্কৃতি তৈরি হওয়ায় ছাত্রলীগ দিন দিন আরও বর্বর হয়ে উঠছে। একজন কিডনি রোগীর ওপর এমন বর্বরোচিত হামলার বিচার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নিশ্চিত না করলে সমিতি আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করতে বাধ্য হবে।

ক্যাম্পাস সাংবাদিকদের এই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ইমাম ইমু বলেন, চাকসুর অবর্তমানে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকেরা শিক্ষার্থীদের মুখপাত্র হিসেবে কাজ করছেন। সেই সাংবাদিকেরাই যদি ক্যাম্পাসে অনিরাপদ হন, তাহলে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে কেউই নিরাপদ নন। এর আগেও সাংবাদিক মারজান আক্তারের ওপর হামলার ঘটনায় বিচার নিশ্চিত করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এটা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের জন্য লজ্জার।

উপাচার্যের আশ্বাস

মানববন্ধন শেষে উপাচার্য শিরীণ আখতারকে সম্প্রতি ক্যাম্পাসে ঘটা সাংবাদিক হেনস্তার ব্যাপারে প্রশ্ন করেন বিভিন্ন সংবাদপত্র ও টেলিভিশনে কর্মরত সাংবাদিকেরা। এ সময় উপাচার্য শিরীণ আখতার বলেন, ‘সাংবাদিক দোস্ত মোহাম্মদের ওপর বর্বরোচিত হামলার নিন্দা জানাচ্ছি, এর উপযুক্ত শাস্তি কার্যকর করার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উপাচার্য শিরীণ আখতার আরও বলেন, জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনা হবে। এ বিষয়ে তিনি প্রক্টর নূরুল আজিম সিকদারকে নিয়ে বৈঠক করবেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী, প্রক্টর, নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার বাদী হয়ে এ ঘটনায় একটি মামলা করবেন। যদি অপরাধ প্রমাণিত হয়, জড়িত ব্যক্তিদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হবে। আগের ঘটনাগুলোতে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানান উপাচার্য।