স্বাধীনতা দিবসে ভৈরব ও নরসিংদীবাসী পেলেন ঢাকায় যাতায়াতের নতুন ট্রেন
ঢাকা-ভৈরব রেলপথে দীর্ঘদিন ধরে নতুন একটি কমিউটার ট্রেনের দাবি জানিয়ে আসছিলেন ভৈরব ও নরসিংদীবাসী। এর পরিপ্রেক্ষিতে এ রেলপথে নতুন একটি কমিউটার ট্রেন অচিরেই চালু হচ্ছে—এমন আলোচনাও চলছিল দুই বছর ধরে। অবশেষে স্বাধীনতা দিবসের দিন আজ বুধবার এ রেলপথে ‘নরসিংদী কমিউটার’ নামে নতুন ট্রেন চালু হয়েছে।
আজ সকাল পৌনে সাতটায় ভৈরব স্টেশন থেকে ট্রেনটি ঢাকার উদ্দেশে প্রথম যাত্রা করে। উদ্বোধনী যাত্রায় ভৈরব স্টেশনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ রেলওয়ে সহকারী যন্ত্র প্রকৌশলী রেজাউল ইসলাম ও ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (পরিবহন) শাহজাহান পাটোয়ারী। কমলাপুর স্টেশনে রেলপথ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান যাত্রীদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেন।
উদ্বোধনী যাত্রায় ট্রেনটির যাত্রীদের একজন ছিলেন জীবন মিয়া। তিনি স্থানীয় সরকারি হাজী আসমত কলেজের শিক্ষার্থী। উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে জীবন বলেন, ‘ভৈরব ও নরসিংদীবাসীর সবকিছুতেই ঢাকার ওপর নির্ভরতা। ঢাকায় কাজে গিয়ে আর রাতে থাকতে হবে না। এখন দিনের কাজ শেষ করে দিনেই বাড়ি ফেরার ক্ষেত্রে ট্রেনটি দারুণ সহায়ক হবে। এ কারণে ট্রেনটি আমার কাছে মনে হচ্ছে, রেলওয়ের কাছ থেকে পাওয়া এবারের স্বাধীনতা দিবসের বিশেষ পুরস্কার।’
রেলওয়ে সূত্র জানায়, বর্তমানে একটি ট্রেন চলবে। ট্রেনটি ভৈরব থেকে ঢাকা গিয়ে আবার ফেরত আসবে। ঈদের পর আরেকটি ট্রেন চালু হবে। তখন দুটি ট্রেন ভৈরব থেকে ঢাকা গিয়ে আবার ফেরত আসবে। ট্রেনটি ভৈরব স্টেশন থেকে যাত্রা শুরু করে দৌলতকান্দি, মেথিকান্দা, নরসিংদী, আড়িখোলা, টঙ্গী, বিমানবন্দর, ক্যান্টনমেন্ট, তেজগাঁও স্টেশনে যাত্রাবিরতি রয়েছে। সকাল ৯টা ৫ মিনিটে কমলাপুর স্টেশনে পৌঁছাবে। ফলে ভৈরব থেকে ঢাকা আসতে লাগবে ২ ঘণ্টা ২০ মিনিট। ভৈরব থেকে ঢাকার ভাড়া ৪৫ টাকা।
রেলওয়ে সূত্র আরও জানায়, নতুন এ কমিউটার ট্রেনটির আসন বিন্যাস আর সব কমিউটার ট্রেনের মতো নয়। আসন বিন্যাস মেট্রোরেলের মতো। বগি ১১টি। দুই পাশে বেঞ্চের মতো আসন, মাঝখানো দাঁড়ানোর পরিসর বেশ বড়। নারীদের জন্য থাকছে একটি সংরক্ষিত বগি। আসনে বসে যেতে পারবে ৬৫২ জন। আসনবিহীন অন্তত ১ হাজার ৫০০ যাত্রী ট্রেনে উঠতে পারবেন। নামাজের জন্য জায়গা ও অজুর ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
এদিকে নতুন ট্রেনের যাত্রা উপলক্ষে ভৈরব স্টেশনে আজ সকাল থেকেই প্রাণচাঞ্চল্য ছিল। প্রথম ট্রেনের যাত্রী হতে অনেকে নির্ধারিত সময়ের আগেই স্টেশনে এসে অপেক্ষা করেন। নিপা রানী দাস ভৈরব বাজার টিনপট্টি এলাকার বাসিন্দা। দুই সন্তান নিয়ে বিশেষ প্রয়োজনে নরসিংদী কমিউটার ট্রেনের যাত্রী হতে এসেছেন। নিপা বলেন, ‘খুব দরকার ছিল। পেলাম। সবার উপকার হবে।’
রেলওয়ে ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (পরিবহন) শাহজাহান পাটোয়ারী বলেন, রেলওয়ে যাত্রীদের প্রয়োজনীয় সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছে। যাত্রীদের যাত্রাপথ সহজ করতেই স্বাধীনতা দিবসে নরসিংদী কমিউটার ট্রেনটি চালু করা হলো।