ঢাকার সাভার উপজেলায় মধুমতি মডেল টাউন প্রকল্প উচ্ছেদের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন প্লট মালিকসহ সেখানে বসবাসকারীরা। উপজেলার আমিনবাজারে প্রকল্পটির সামনে ঢাকা–আরিচা মহাসড়কে এ কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা।
আজ শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মধুমতি মডেল টাউনের মূল ফটকের সামনে জড়ো হন মধুমতি মডেল টাউনের প্লটের মালিক ও সেখানে বসবাসকারীরা। সেখানে তাঁরা প্রতিবাদ সমাবেশ করেন। পরে তাঁরা আবাসন প্রকল্পসংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের আরিচামুখী লেনের পাশে মানববন্ধন করেন।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া হাসিনা আক্তার বলেন, ‘২০০৩ সালে মধুমতি মডেল টাউনে আড়াই কাঠার একটি প্লট কিনেছি। জমির সব কাগজপত্র রয়েছে। এরপরও আমাদের উচ্ছেদ করা হবে বলা হচ্ছে। যতটুকু সম্বল ছিল, সবটুকু দিয়ে প্লটটি কিনেছিলাম। কাগজপত্র দেখে অবৈধ হলে ব্যবস্থা নেবে। আমার তো সব কাগজপত্র আছে।’
মধুমতি মডেল টাউন প্লট মালিক ঐক্য সোসাইটির প্রেসিডেন্ট ও নান্দনিক হাউজিংয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট আইনজীবী মোহাম্মদ আবদুস সাত্তার বলেন, ‘আদালতের একটি রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে রাজউক সিদ্ধান্ত নিয়েছে আমাদের উচ্ছেদ করে দেবে। ২৫ বছর আগে এখানে জায়গা কিনেছি, রেজিস্ট্রি করেছি, মিউটেশন করেছি, খাজনা দিয়েছি এবং এখানে আমরা বসবাস করছি। উচ্চ আদালতের রায়ে তো দ্বিগুণ-তিন গুণ টাকা দিতে বলা হয়েছে। সে অনুসারে আজ পর্যন্ত টাকা আমাদের দেওয়া হয়নি। এখন আমাদের বিদ্যুৎ–সংযোগ বিচ্ছিন্ন, রাস্তা বন্ধ করে দিয়ে এখান থেকে উচ্ছেদ করতে চাচ্ছে। পূর্ব, পশ্চিম, উত্তর, দক্ষিণ—সব পাশে জায়গা রেজিস্ট্রি হচ্ছে, খাজনা–খারিজ নিচ্ছে। শুধু আমাদেরগুলো হচ্ছে না।’
আবদুস সাত্তার আরও বলেন, ‘ক্ষতিপূরণের টাকা যদি বর্তমান বাজারমূল্য এবং নিয়ম অনুযায়ী দেওয়া হয়, তাহলে আমরা চলে যাব। আমাদের কোনো আপত্তি নেই। এই ক্ষমতা সরকারের আছে। সরকার নিয়ম অনুযায়ী টাকা দিলে আমাদের কোনো আপত্তি নেই।’
মধুমতি হাউজিং সোসাইটির সভাপতি সৈয়দ মোশারফ হোসেন বলেন, ‘আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। আমরা নিজের টাকায় জমি কিনেছি। রেজিস্ট্রি করা জমি, মিউটেশন করা জমি। বৈধভাবে আমরা জমি কিনেছি, আমরা অবৈধ কোনো কিছু করিনি। এই জমির নাল জমি, কৃষিজমি হিসেবে ছিল। বৈধ জমি কিনেছি, এখন আমরা আদালতের রায় বাতিল হোক, সেটি চাচ্ছি।’
মধুমতি হাউজিং সোসাইটির সাংগঠনিক সম্পাদক সুজাউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ষড়যন্ত্রমূলক যে মামলা হয়েছিল, সেই মামলায় আমরা বৈষম্যের শিকার। সেই মামলায় আমাদের বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক রায় হয়েছে। যে বৈষম্যমূলক রায় দেওয়া হয়েছে, সেখানেও বলা আছে যারা হার্ড মানি বিনিয়োগ করেছে, তাদের স্বার্থ রক্ষা করতে হবে। তাদের রিসিট মূল্যের দুই থেকে তিন গুণ টাকা ফেরত দিতে হবে। আমরা যদিও এই রায় মানি না, তারপরও এই রায়ের তোয়াক্কা না করে যারা হার্ড মানি বিনিয়োগ করেছে, যারা এখানে প্লট কিনেছে, তাদের ক্ষতিপূরণ না দিয়ে রাজউক চক্রান্তমূলকভাবে আমাদের উচ্ছেদের ষড়যন্ত্র করছে। আমরা এই মানববন্ধন থেকে ঘোষণা করতে চাই, আমরা জীবন দেব, তবু জমি ছাড়ব না।’