চলন্ত ফেরি থেকে পদ্মায় ঝাঁপিয়ে পড়া নারীর সন্ধান পাওয়া যায়নি, মিলেছে পরিচয়
মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাট থেকে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাটগামী চলন্ত ফেরি থেকে পদ্মা নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ার দুই দিনেও নিখোঁজ নারীর সন্ধান পাওয়া যায়নি। তবে তাঁর পরিচয় মিলেছে।
স্বজনদের দাবি, ওই নারীর নাম মোছা. ফজিলাতুন্নেছা (৪৮)। তিনি সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ থানার নলতা ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড নলতা গ্রামের মৃত আবদুল আজিজের স্ত্রী। গাজীপুর মেয়ের বাসা থেকে বেড়ানো শেষে সাতক্ষীরায় নিজ বাড়িতে ফিরছিলেন তিনি।
গত সোমবার সকালে ‘বাইগার’ নামক একটি ফেরি থেকে পদ্মা নদীতে লাফ দেয় অজ্ঞাতপরিচয়ের এক নারী। এ ঘটনার দুই দিন পার হলেও আজ দুপুর ১২টা পর্যন্ত তাঁর কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।
নিজেকে ওই নারীর ভাগ্নে দাবি করা সাদ্দাম হোসেন নামের এক ব্যক্তি আজ মুঠোফোনে প্রথম আলোকে জানান, ‘১০ জানুয়ারি খালাম্মা (ফজিলাতুন্নেছা) মেয়ে বাড়ি গাজীপুরে গিয়েছিলেন। কয়েক দিন ধরে অজ্ঞাত কারণে তিনি বিষণ্নতায় ভুগছিলেন। ১৩ জানুয়ারি সকালে বাসার কাউকে না জানিয়ে সেখান থেকে সাতক্ষীরার উদ্দেশে রওনা হন তিনি। পরে আমরা খোঁজ নিতে থাকি। ওই দিন সন্ধ্যায় সাতক্ষীরা এক্সপ্রেস পরিবহনের কাউন্টারে খোঁজ নিতে গিয়ে একটি ব্যাগ পাই, সেখানে খালাম্মার পোশাক দেখে নিশ্চিত হই। পরে ওই দিন সন্ধ্যায় আমরা প্রথম আলোর অনলাইনে ফেরি থেকে পদ্মা নদীতে লাফ দেওয়ার খবর দেখি। পরে পরিবহনের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হই, আমার খালাম্মাই ফেরি থেকে নদীতে পড়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত নৌপুলিশের সহযোগিতায় তাঁর নদীতে তাঁর সন্ধান চলেছে।’
প্রত্যক্ষদর্শী ও একটি বাসের তত্ত্বাবধায়ক সাইদুল ইসলাম জানান, গত সোমবার সকাল সোয়া দশটার দিকে তাঁদের বাস বহনকারী ফেরিটি পাটুরিয়া ঘাট ছেড়ে মাঝ নদীতে পৌঁছালে ফেরির সামনের অংশের বাম দিকে পকেটের কাছে বোরকা পড়া এক নারী হঠাৎ লাফ দেয়। এ সময় তাঁর পরনে কালো রঙের বোরকা ও মাথায় সাদা রঙের স্কার্ফ ছিল। তিনি কোন পরিবহনে বা কীভাবে ফেরিতে এসেছেন—এ বিষয়ে সঠিক তথ্য বলতে পারছেন না।
তবে ফেরিতে থাকা একাধিক হকার জানান, ওই নারী নদীতে পড়ে যাওয়ার সময় ফেরির শিকল ধরে রাখার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু আমরা চেষ্টা করার আগেই মুহূর্তেই নদীতে পড়ে যান। হয়তো অসাবধানতাবশত তিনি ফেরি থেকে পড়ে গেছেন।
দৌলতদিয়া নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইমরান মাহমুদ প্রথম আলোকে জানান, আজ দুপুর ১২টা পর্যন্ত নিখোঁজ নারীর কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত নৌ পুলিশ ও কোস্টগার্ড পদ্মা নদীতে তাঁর সন্ধান চালিয়েছে।