গেদিমন বেগম তাঁর বয়স কত, তা মনে করতে পারলেন না। তবে জানালেন, ১০ বছর ধরে তাঁর স্বামী শয্যাশায়ী। কম্বল হাতে তিনি বলেন, ‘কেউ কিচ্ছু দেয় না। তোমরা গরিবকে দিলে, খুশি হইচি।’
প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে দেওয়া কম্বল হাতে পেয়ে চোখ মুছে এ মন্তব্য করেন গেদিমন। গতকাল শনিবার সকালে রাজশাহীর বাঘা উপজেলায় শীতার্ত ২০০ মানুষের মধে৵ কম্বল বিতরণ করা হয়। উপজেলার সরেরহাট গ্রামে আব্দুল গণি ডিগ্রি কলেজ মাঠে শীতার্ত মানুষদের হাতে কম্বল তুলে দেন প্রথম আলো বন্ধুসভা রাজশাহীর সদস্যরা।
লাঠিতে ভর দিয়ে কম্বল নিতে এসেছিলেন মহসিন আলী। কম্বল হাতে পেয়ে প্রবীণ এই ব্যক্তি শুধু বললেন, ‘কম্বলখান ভালো হইচে।’ বুলবুলি বেগম (৭০) নামের এক নারী বললেন, ‘আনসার বাহিনীর সদস্য ছিনু। তখন অনেক কিচই পাইচি। একুন একলা পইড়ি থাকি। কেউ দেকার নই। কম্বলখান সুন্দর হইচে।’
বন্ধুসভার সদস্যরা কম্বল বিতরণের আগে উপজেলার গড়গড়ি ইউনিয়ন ঘুরে ২০০ জন হতদরিদ্র শীতার্ত মানুষ খুঁজে বের করেন। এরপর একটি তালিকা তৈরি করে তাঁদের একটি করে টোকেন দেন।
কম্বল পেয়ে হাজেরা বেগম নামের এক নারী বলেন, ‘বাপ মরিচে অনেক বছর আগে। ভাইয়েরাও জমির ভাগ দেয়নি। ব্যাটাডা দোকানে পইড়ি মইরি গেল। একুন আমার কেউ নাই। কেউ খোঁজ রাকে না।’
কম্বল বিতরণের সময় উপস্থিত ছিলেন আব্দুল গণি ডিগ্রি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ আবদুস সামাদ। তিনি বলেন, ‘প্রথম আলো যেন বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের পাশাপাশি আরও মানবহিতৈষী হতে পারে, এই শুভকামনা জানাই।’ নাট্যকার শিমুল সরকার বলেন, এই সামাজিক ও সেবামূলক কাজের জন্যই প্রথম আলোকে বলা হয় সংবাদপত্রের চেয়ে আরও একটু বেশি।
প্রথম আলো বন্ধুসভার সদস্যরা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন আব্দুল গণি ডিগ্রি কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি শাহিনুর রহমান বিপ্লব, সংস্কৃতিকর্মী স্বপন সরকার, নাট্যশিল্পী শিশির সরকার প্রমুখ।
শীতার্ত মানুষের সহযোগিতায় আপনিও এগিয়ে আসতে পারেন। সহায়তা পাঠানো যাবে ব্যাংক ও বিকাশের মাধ্যমে। হিসাবের নাম: প্রথম আলো ট্রাস্ট/ত্রাণ তহবিল, হিসাব নম্বর: ২০৭ ২০০ ১১১৯৪, ঢাকা ব্যাংক লিমিটেড, কারওয়ান বাজার শাখা, ঢাকা। অথবা বিকাশে সহায়তার অর্থ পাঠাতে পারেন: ০১৭১৩–০৬৭৫৭৬ এই মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট নম্বরে। এ ছাড়া বিকাশ অ্যাপে ডোনেশন অপশনের মাধ্যমেও আপনার অনুদান পাঠাতে পারেন।