নান্দাইলে ‘সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার’ কথা বলে টাকা নিতেন মহিলা লীগ নেত্রী

নান্দাইলে মহিলা লীগের নেত্রীর বিরুদ্ধে গ্রামবাসীর বিক্ষোভ। গত সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার কচুরি গ্রামেছবি: প্রথম আলো

ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলায় মহিলা লীগের এক নেত্রীর বিরুদ্ধে সরকারি বিভিন্ন সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে ১০-১৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত সোমবার উপজেলার সিংরইল ইউনিয়নের কচুরি গ্রামে এই অভিযোগে বিক্ষোভ করেছেন ভুক্তভোগী ব্যক্তিরা।

অভিযুক্ত নেত্রীর নাম মোছা. জবা আক্তার। তিনি উপজেলার ৮ নম্বর সিংরইল ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড মহিলা লীগের সভাপতি।

কচুরি গ্রামের একটি সড়কে হওয়া এই বিক্ষোভে উপস্থিত কবীর মিয়া নামের এক ব্যক্তি বলেন, জবা আক্তার তাঁর স্ত্রীকে প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড করে দেওয়া কথা বলে ছয় হাজার টাকা নিয়েছিলেন। শরীফুল ইসলাম নামের এক তরুণের দাবি, তাঁর মা নাজমা আক্তারকে সেলাই মেশিন দেওয়ার কথা বলে জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি ও সাড়ে তিন হাজার টাকা নিয়েছেন জবা। মমতা বেগম নামের এক নারীর অভিযোগ, একটি সরকারি ঘর ও একটি গভীর নলকূপ দেওয়ার কথা বলে জবা আক্তার তাঁর কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা নিয়েছেন।

একই ইউনিয়নের আলাবক্সপুর গ্রামের মোছা. নুরুন্নহার বলেন, একটি সরকারি পানির মোটর স্থাপন করে দেওয়ার কথা বলে তাঁর কাছ থেকে দুই বারে ১৫ হাজার টাকা নিয়েছেন মহিলা লীগ নেত্রী জবা আক্তার। পাশের জয়রামপুর গ্রামের ফাতেমা আক্তার অভিযোগ করেন, সরকারি নলকূপ দেওয়ার কথা বলে তাঁর কাছ থেকে ছয় হাজার টাকা নিয়েছেন জবা।

কচুরি গ্রামের কয়েকজন ব্যক্তি অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নানা দাপট দেখিয়ে ওই নারীনেত্রী তিনটি গ্রামের শতাধিক লোকের কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। মামলায় জড়িয়ে দিতে পারেন, এমন ভয়ে গ্রামের লোকজন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েও ওই নেত্রীর বিরুদ্ধে কিছু বলতে সাহস পাননি। সরকার পরিবর্তনের কারণে এখন বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করছেন তাঁরা।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে জবা আক্তার গ্রামের লোকজনের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করেন। তবে কতজনের কাছ থেকে কী পরিমাণ টাকা নিয়েছেন, তা বলতে চাননি। এসব টাকা তিনি মহিলা লীগের ইউনিয়ন সভাপতি মোছা. ময়না আক্তারকে দিয়েছেন বলে দাবি করেন। তবে এ ব্যাপারে ময়না আক্তারের বক্তব্য জানা যায়নি।

ময়না আক্তারের বাড়ি সিংরইল ইউনিয়নের তেলিয়া গ্রামে। ওই গ্রামে তাঁর বাড়িতে গিয়ে তাঁকে পাওয়া যায়নি। তাঁর মুঠোফোন নম্বরটিও বন্ধ পাওয়া যায়।