কার্যালয়ে ঢুকে অধ্যক্ষকে গুলি করার হুমকি যুবলীগের নেতার

ময়মনসিংহের নাসিরাবাদ কলেজের অধ্যক্ষ আহমেদ শফিককে গুলি করার হুমকি দিয়েছেন জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আখেরুল ইমাম। গত ৩০ এপ্রিল অধ্যক্ষের কার্যালয়েছবি: ভিডিও থেকে সংগৃহীত

ময়মনসিংহের ঐতিহ্যবাহী নাসিরাবাদ কলেজের অধ্যক্ষ আহমেদ শফিককে গুলি করার হুমকি দিয়েছেন জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আখেরুল ইমাম ওরফে সোহাগ। গত ৩০ এপ্রিল আখেরুল ইমাম কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে অধ্যক্ষের কার্যালয়ে গিয়ে এই হুমকি দেন। এ ঘটনায় আখেরুলসহ পাঁচজনের নামে কোতোয়ালি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন অধ্যক্ষ।

অধ্যক্ষ আহমেদ শফিক আজ মঙ্গলবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘নাসিরাবাদ কলেজের পরিচালনা কমিটি নিয়ে সম্প্রতি কিছুটা জটিলতার সৃষ্টি হয়। এর জেরে কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করে। গত ৩০ এপ্রিল আখেরুল ইমাম আমার কার্যালয়ে এসে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পর আমি কী ব্যবস্থা নিয়েছি, তা জানতে চান। এসব নিয়ে তিনি একতরফাভাবে বিভিন্ন কথা বলার পর একপর্যায়ে বলেন, “আমার নামে মামলা করবেন? গুলি করে মেরে ফেলব।”’

অধ্যক্ষ আরও বলেন, আখেরুল ইমাম নাসিরাবাদ কলেজ ছাত্রসংসদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক (জিএস)। বর্তমানে ছাত্র সংসদের কোনো অস্তিত্ব নেই। কিন্তু আখেরুল মাঝেমধ্যেই কলেজের বিভিন্ন বিষয়ে অযাচিতভাবে হস্তক্ষেপ করেন। তিনি বলেন, ‘এর আগে ২০১৮ সালের ১৬ মে আখেরুল আমাকে অসম্মানজনক কথা বলেন এবং প্রাণনাশের হুমকি দেন। ওই ঘটনায়ও আমি ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছিলাম।’

এ ঘটনায় গতকাল সোমবার দিবাগত রাত পৌনে একটার দিকে সিসিটিভি ফুটেজসহ ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন অধ্যক্ষ আহমেদ শফিক। এরপরই ঘটনাটি নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়।

হুমকির বিষয়ে আখেরুল ইমাম আজ দুপুরে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত ৩০ এপ্রিল আমি একজন দরিদ্র শিক্ষার্থীর কলেজের ফি কমানোর অনুরোধ করতে অধ্যক্ষের কাছে গিয়েছিলাম। গিয়ে প্রথমেই দেখি, অধ্যক্ষ একজন সাবেক ছাত্রদল নেতার সঙ্গে কথা বলছেন।’ হুমকি দেওয়ার বিষয়ে আখেরুল ইমাম বলেন, ‘আমি অধ্যক্ষকে হুমকি দিইনি। ২০১৮ সালে অধ্যক্ষ আমাকে গুলি করে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছিলেন। কথা প্রসঙ্গে ওই কথাই আমি তাঁকে (অধ্যক্ষ) বলি। তিনি ভিডিওর খণ্ডিত অংশ ফেসবুকে দিয়েছেন। এ কারণে মনে হচ্ছে, আমি তাঁকে গুলি করে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছি। পুরো ভিডিও দেখলে আসল ঘটনা বোঝা যাবে।’

৫৫ সেকেন্ড দৈর্ঘ্যের ওই ভিডিওতে যুবলীগ নেতা আখেরুল ইমামকে অধ্যক্ষের কক্ষে বসে কথা বলতে দেখা যায়। তাঁর পাশে আরও তিনজন ছিলেন। এ সময় ওই কক্ষে থাকা অন্য এক ব্যক্তিকে ধমক দিয়ে বের করে দেন আখেরুল। একপর্যায়ে তিনি যখন অধ্যক্ষকে গুলি করার হুমকি দেন, তখন আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে এই শিক্ষক চেয়ার ছেড়ে উঠে কক্ষ থেকে বেরিয়ে যান। এ সময় অধ্যক্ষকে থামানোর চেষ্টা করতে দেখা যায় যুবলীগ নেতা আখেরুলকে।

ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাঈন উদ্দিন বলেন, ‘অধ্যক্ষের জিডি আমরা পেয়েছি। বিষয়টি আমরা তদন্ত করছি।’