পদ্মা নদীতে দুর্বৃত্তদের হামলা, নদীতে ঝাঁপ দেওয়া দুই পুলিশ কর্মকর্তা নিখোঁজ
কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার পদ্মা নদীতে পুলিশ ও স্থানীয় দুজন ইউপি সদস্যের ওপর হামলা হয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত দুজন পুলিশ সদস্য নিখোঁজ। তবে কী কারণে হামলার ঘটনা ঘটেছে, তা নিশ্চিত করে জানাতে পারেনি পুলিশ।
আজ সোমবার ভোর ৪টার দিকে উপজেলার বেড় কালোয়া এলাকার পদ্মা নদীতে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থলে জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মিজানুর রহমানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আছেন।
হামলায় আহত ব্যক্তিরা হলেন, কয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ছানোয়ার হোসেন ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আনোয়ার হোসেন। তাঁদের মুঠোফোন নম্বর বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। এ ছাড়া আরও একজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তিনিসহ ওই নৌকায় থাকা আরেক পুলিশ সদস্যের নাম জানা যায়নি।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ ভোররাত ৪টার দিকে একটি নৌকায় ইউপি সদস্য ছানোয়ার ও আনোয়ার কুমারখালী থানার চার পুলিশ সদস্যকে নিয়ে পদ্মায় যান। এ সময় অবৈধভাবে জাল ফেলে মাছ ধরছিলেন জেলেরা। পুলিশের নৌকাটি জেলেদের দিকে এগিয়ে গেলে দুর্বৃত্তরা তাদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় নৌকায় থাকা এ এস আই সদরুল আলম ও এ এস আই মুকুল হোসেন নদীতে ঝাঁপ দেন। এর পর থেকেই তাঁরা নিখোঁজ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক বাসিন্দা জানিয়েছেন, ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞা চললেও পদ্মা নদীতে প্রতিনিয়ত অবৈধভাবে মাছ শিকার করছেন জেলেরা। ওই এলাকায় জেলেদের প্রধান ইয়ারুল। পদ্মায় তাঁর নেতৃত্বে একটি বাহিনীও আছে। আজ ভোরে স্থানীয় ইউপি সদস্যদের সহযোগিতায় কয়েকজন পুলিশ নৌকা নিয়ে পদ্মা নদীতে যান। এ সময় তাঁরা অভিযানের নামে জেলেদের মাছ লুট করার চেষ্টা করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বেশ কয়েকটি নৌকার ১৫ থেকে ২০ জন তাঁদের ওপর হামলা চালান। হামলাকারীদের মাথায় হেলমেট পরা ছিল বলে জানতে পেরেছেন।
কুমারখালীর জ্যেষ্ঠ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাহমাদুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত রাতে কুমারখালীর আওতায় পদ্মা নদীতে কোনো মৎস্য অভিযান ছিল না। পদ্মায় পুলিশ কেন গেছে, তা জানি না।’
ঘটনাস্থল থেকে কুমারখালী ফায়ার সার্ভিসের ভারপ্রাপ্ত স্টেশন কর্মকর্তা ফিরোজ আহমেদ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, আজ সকাল ৯টা ১০ মিনিটে খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট শিলাইদহ খেয়াঘাট এলাকায় যায়। তারা খবর পেয়েছে, দুই পুলিশ সদস্য নদীতে নিখোঁজ হয়েছেন। তবে ডুবুরি না থাকায় তারা কোনো অভিযান শুরু করেনি। খুলনা থেকে ডুবুরি দল রওনা দিয়েছে। ঘণ্টাখানেকের মধ্যে পৌঁছাবে। পৌঁছালে উদ্ধার অভিযান শুরু হবে।
ঘটনাস্থল থেকে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন ও মিডিয়া) পলাশ কান্তি নাথ বেলা ১১টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, পদ্মায় একটি ঘটনায় কুমারখালী থানা-পুলিশের দুজন এ এস আই নিখোঁজ আছেন। তাঁদের উদ্ধারে পুলিশের একাধিক দল নৌকা নিয়ে পদ্মায় তল্লাশি চালাচ্ছে। তবে তাঁরা কী কারণে এখানে এসেছিলেন, সেটা এখন পর্যন্ত পরিষ্কারভাবে জানতে পারেননি। পুলিশের বিশেষ অভিযান চলমান বলে তিনি উল্লেখ করেন।