যৌথ বাহিনীর হাতে আটক যুবদল নেতা তৌহিদুল হত্যা মামলায় ১ আসামি গ্রেপ্তার
কুমিল্লায় যৌথ বাহিনীর হাতে আটকের পর নির্যাতনে যুবদল নেতা তৌহিদুল ইসলামের নিহত হওয়ার অভিযোগে করা মামলায় এক আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ সোমবার ভোরে কুমিল্লার ইপিজেড এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা।
গ্রেপ্তার ব্যক্তির নাম সাইদুল হাসান (৪৫)। তিনি কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার ইটাল্লা গ্রামের বাসিন্দা। গত ৫ ফেব্রুয়ারি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহত তৌহিদুল ইসলামের স্ত্রী। এ মামলায় বেসামরিক ৬ ব্যক্তিকে আসামি করা হয়, যাঁদের সঙ্গে তৌহিদুলের পরিবারের জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ ছিল। গ্রেপ্তার সাইদুল মামলার ৫ নম্বর আসামি। এ ছাড়া অজ্ঞাতপরিচয় ২০ থেকে ২৫ জনকে আসামি করা হয়। তাঁরা সিভিল (সাদা) ও সেনাবাহিনীর মতো পোশাক পরিহিত ছিলেন বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
আজ বেলা ১১টার দিকে কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিনুল ইসলাম বলেন, থানায় হত্যা মামলা হওয়ার পর থেকে সাইদুল আত্মগোপনে ছিলেন। এ মামলার অন্য আসামিরা পলাতক। তাঁদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রেখেছে পুলিশ। সাইদুলকে আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।
সাইদুলের দুই ভাইও এ মামলার এজাহারনামীয় আসামি। মামলা দায়েরের কয়েক দিন পর সাইদুলের বাবা মোক্তল হোসেন ও আরেক আসামি ইটাল্লা গ্রামের তানজিল উদ্দিনের বাবা ফজলুর রহমান কুমিল্লা নগরে সংবাদ সম্মেলন করে দাবি করেন, জমি–সংক্রান্ত বিরোধের জেরে তাঁদের সন্তানদের ফাঁসানো হয়েছে।
এ বিষয়ে তৌহিদুলের বড় ভাই আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের তেমন কোনো তৎপরতা দেখছি না। আমরা সব আসামির দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি। জমিজমা নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে তাঁরাই আমার ভাইয়ের হত্যার নেপথ্যে ছিল। আমরা খুনিদের বিচার চাই।’
তৌহিদুল ইসলাম কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার পাঁচথুপি ইউনিয়নের ইটাল্লা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি একই ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক ছিলেন। গত ৩১ জানুয়ারি তৌহিদুলের বাবার কুলখানি অনুষ্ঠান ছিল। তাঁর পরিবারের দাবি, এর আয়োজন চলাকালে ৩০ জানুয়ারি দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে তাঁকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যান আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। পরদিন দুপুরে খোঁজ পান, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তৌহিদুলের মরদেহ পড়ে আছে। সেখানে গিয়ে তাঁরা দেখেন, তৌহিদুলের শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন।
ঘটনার পরপরই পুলিশ জানায়, ৩১ জানুয়ারি বেলা ১১টার দিকে তৌহিদুলকে নেওয়ার জন্য সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে কোতোয়ালি মডেল থানার পুলিশকে জানানো হয়। পুলিশের কাছে হস্তান্তরের সময় তিনি অচেতন অবস্থায় ছিলেন। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।