শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে চুয়েট উপাচার্যের পদত্যাগ
শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে পদত্যাগ করেছেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) উপাচার্য মোহাম্মদ রফিকুল আলম। আজ বুধবার রাষ্ট্রপতি বরাবর তিনি পদত্যাগের আবেদন করেছেন।
পদত্যাগের আবেদনের বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার শেখ মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগের সচিবের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি বরাবর উপাচার্য পদত্যাগের আবেদন করেছেন। পদত্যাগপত্রে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়েছেন তিনি।
জানতে চাইলে চুয়েটের উপাচার্য মোহাম্মদ রফিকুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা আমাকে চাচ্ছেন না। আমি চুয়েটের সবার মঙ্গল চাই। তাই চুয়েটের স্বার্থে আমি পদত্যাগ করে পদত্যাগপত্র রেজিস্ট্রারের কাছে পাঠিয়েছি। বাকি কাজ রেজিস্ট্রার সম্পন্ন করবেন।’
মোহাম্মদ রফিকুল আলম ২০২০ সালের ২৬ আগস্ট দ্বিতীয় মেয়াদে চুয়েটের উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পান। এ মাসের ২৫ আগস্ট তাঁর মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে এর মধ্যেই শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে পদত্যাগ করেছেন তিনি।
এদিকে ছাত্রকল্যাণ পরিচালক মো. রেজাউল করিমকেও আজ দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার শেখ মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশের মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
গতকাল উপাচার্য, সহ-উপাচার্য ও ছাত্রকল্যাণ পরিচালকের পদত্যাগ চেয়ে ৪৮ ঘণ্টার সময় বেঁধে দেন শিক্ষার্থীরা। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের উপপরিচালক মো. সাইফুল ইসলামের কাছে তিন দফা দাবি লিখিতভাবে পেশ করেন শিক্ষার্থীরা। এতে উপাচার্য, সহ-উপাচার্য ও ছাত্রকল্যাণ পরিচালকের পদত্যাগের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনবিরোধী পোস্ট করায় তড়িৎ ও কম্পিউটার কৌশল অনুষদের ডিন মোহাম্মদ শামসুল আরেফিনকে ডিনের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতির দাবি জানানো হয়। চুয়েট ছাত্রলীগের সভাপতি সাগরময় আচার্য, সাধারণ সম্পাদক বিজয় হোসেন, সহসভাপতি ইমাম হোসেন নীরব, সাংগঠনিক সম্পাদক আজহারুল ইসলাম মাহমুদ ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তৌফিকুর রহমানের বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে তাঁদের ছাত্রত্ব বাতিল ও আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি করা হয়। এ ছাড়া আগামীকালের (১৫ আগস্ট) মধ্যে নতুন উপাচার্য নিয়োগে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মতামতকে প্রাধান্য দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। এসব দাবি পূরণ না হলে একাডেমিক কার্যক্রমে না ফেরাসহ কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চুয়েটের সমন্বয়ক ও পুরকৌশল বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মাহফুজার রহমান বলেন, ‘আমরা উপাচার্য, সহ-উপাচার্য, ছাত্রকল্যাণ পরিচালক এবং তড়িৎ ও কম্পিউটার কৌশল অনুষদের ডিনের পদত্যাগ চেয়েছিলাম। উপাচার্য ও ছাত্রকল্যাণ পরিচালক তাঁদের দায়িত্ব থেকে সরে গেলেও এখনো বাকি দুজন পদত্যাগ করেননি। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারী ছাত্রলীগ নেতাদের ছাত্রত্ব বাতিল করে শাস্তির দাবি জানিয়েছিলাম। এ বিষয়ে এখনো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। দাবিগুলো আগামীকালের মধ্যে না মানলে শিক্ষার্থীরা আরও কঠোর কর্মসূচি দেবেন।’