যশোর বোর্ডে চার বছরের মধ্যে পাসের হার সবচেয়ে কম
যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডে এ বছর এইচএসসি (উচ্চমাধ্যমিক) পরীক্ষায় ইংরেজি বিষয়ে প্রশ্নপত্র কঠিন হওয়ায় পাসের হার কমেছে। পাসের হার ৬৪ দশমিক ২৯। পাসের এই হার গত চার বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম।
শিক্ষা–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, অন্য বোর্ডের তুলনায় এবার যশোর শিক্ষা বোর্ডে ইংরেজি, পদার্থবিজ্ঞান ও হিসাববিজ্ঞান বিষয়ে প্রশ্নপত্র কঠিন হয়েছে। এসব বিষয়ের মধ্যে ইংরেজি বিষয়ে পাসের হার ৬৮, যা অন্য সব বিষয়ের চেয়ে সর্বনিম্ন। যার প্রভাব পড়েছে বোর্ডের পাসের হারে।
যশোর শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, এ বছর এই শিক্ষা বোর্ড থেকে ১ লাখ ২২ হাজার ৫১১ শিক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সব বিষয়ে কৃতকার্য হয়েছেন ৭৮ হাজার ৭৬৪ জন। পাসের হার দাঁড়িয়েছে ৬৪ দশমিক ২৯। জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৯ হাজার ৭৪৯ শিক্ষার্থী।
২০২৩ সালে পাসের হার ছিল ৬৯ দশমিক ৪৪, ২০২২ সালে ৮৪ দশমিক ৯৫ ও ২০২১ সালে ৯৮ দশমিক ১১। প্রতিবছর পাসের হার নিম্নমুখী হয়েছে। জিপিএ-৫ প্রাপ্তির সংখ্যাও নিম্নমমুখী। তবে গত বছরের তুলনায় এ বছর ১ হাজার ৬২৭ জন বেশি শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছেন। এর আগের দুই বছরে অনেক বেশি ছিল। এর মধ্যে ২০২২ সালে ১৮ হাজার ৭০৩ ও ২০২১ সালে পেয়েছিলেন ২০ হাজার ৮৭৮ জন।
যশোর বোর্ডে ফলাফল নিন্মগামী হওয়ার কারণ জানতে চাইলে যশোর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মর্জিনা আক্তার বলেন, ‘কোভিড পরিস্থিতি থেকে শুরু করে একের পর এক বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে আমরা যাচ্ছি, যার প্রভাব পড়েছে শিক্ষাক্ষেত্রে। এই শিক্ষার্থীরাই কোভিডের সময়ের ব্যাচ। তারা নবম ও দশম শ্রেণিতে শ্রেণিকক্ষে পাঠ গ্রহণ করতে পারেনি। ফলে তাদের শিখনঘাটতি হয়েছে। এতে তাদের মধ্যে ইংরেজি লেখার দক্ষতা বাড়েনি। যে কারণে ইংরেজিতে তারা খারাপ করেছে, যার প্রভাব পড়েছে গোটা বোর্ডের ফলাফলে।’
যশোর শহরের আবদুর রাজ্জাক মিউনিসিপ্যাল কলেজ থেকে এ বছর ৬৪৫ শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করেছেন ৪৯০ জন। পাসের হার ৭৬ দশমিক ১২। জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১২ জন।
এই প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ জে এম ইকবাল হোসেন বলেন, ‘এ বছর ১৩টি বিষয়ের মধ্যে শিক্ষার্থীরা ৭টি বিষয়ে পরীক্ষা দিয়েছে। আন্দোলন করে ৬টি বিষয়ে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দেয়নি। যে বিষয়গুলোয় পরীক্ষা হয়নি, ওই বিষয়গুলোয় বেশি নম্বর ওঠে, যা পাসের হার বাড়া–কমা ও জিপিএ-৫ পেতে সহায়তা করে। ওই পরীক্ষা হলে ফল আরও একটু ভালো হতো। তা ছাড়া অন্য বোর্ডের তুলনায় এ বছর ইংরেজি, পদার্থবিজ্ঞান ও হিসাববিজ্ঞান বিষয়ে প্রশ্নপত্র একটু কঠিন হয়েছে। এটাও খারাপ হওয়ার একটি কারণ।’
ইংরেজি বিষয়ে খারাপ করায় শুধু আবদুর রাজ্জাক মিউনিসিপ্যাল কলেজ নয়, যশোরের অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফলাফল খারাপ হয়েছে।