সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী সাইদুর রহমান ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন হয়েছে। জেলা আইনজীবী সমিতির উদ্যোগে সংগঠনের ভবনের সামনের সড়কে আজ সোমবার সকালে এই কর্মসূচি পালিত হয়।
ঘটনার চার দিনেও পুলিশ জড়িত ব্যক্তিদের কাউকে আটক করতে না পারায় কর্মসূচিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেন আইনজীবীরা। তাঁরা বলেন, ঘটনার সঙ্গে পুলিশের এক বড় কর্মকর্তার পরিবার জড়িত। এ জন্য পুলিশ ব্যবস্থা নিচ্ছে না। উল্টো হামলার শিকার পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী ও তাঁর আইনজীবী ছেলের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে; তাঁদের হয়রানি করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ; তারা হামলাকারীর পক্ষ নিয়েছে।
মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য দেন জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি নজরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক শেরেনূর আলী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল হক, আইনজীবী আজাদুল ইসলাম ও নূরে আলম সিদ্দিকী।
গত শুক্রবার বিকেলে মধনগর উপজেলার দাতিয়াপাড়া গ্রামে হামলায় সাইদুর রহমান, তাঁর ছেলে আরিফুর রহমানসহ (২৭) সাতজন আহত হন। আরিফুর রহমান জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে জয়ী আবদুর রাজ্জাক ভূঁইয়ার ভাতিজা আজিম মাহমুদের নেতৃত্বে হামলা করার অভিযোগ উঠেছে। আবদুর রাজ্জাক ভূঁইয়া পুলিশের অতিরিক্ত উপমহাপরিচালক আবদুল বাতেনের বড় ভাই। আজিম মাহমুদ পুলিশ কর্মকর্তার ভাতিজা।
৫ জুন নবগঠিত মধ্যনগর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রথম ভোট গ্রহণ হয়। চেয়ারম্যান পদে জয়ী আবদুর রাজ্জাক ভূঁইয়া ও পরাজিত প্রার্থী সাইদুর রহমানের বাড়ি উপজেলার দাতিয়াপাড়া গ্রামে। এ দুই পরিবারের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে নানা বিষয় নিয়ে বিরোধ চলে আসছে।
হামলায় আহত সাইদুর রহমান ও তাঁর ছেলে আইনজীবী আরিফুর রহমান বর্তমানে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। সাইদুর রহমান মুঠোফোনে বলেন, ‘আমরা পরিকল্পিত হামলার শিকার হলাম। কিন্তু পুলিশ হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি; বরং আমাদের হয়রানির চেষ্টা করছে। আমার লোকজন ভয়ে এলাকাছাড়া।’
থানা-পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার রাতে থানায় সাইদুর রহমানসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন আজিম মাহমুদ। এতে তাঁর ভাতিজা বাছেত ভূঁইয়ার (২৭) ওপর হামলা ও টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ করা হয়েছে।
সাইদুর রহমান জানান, নির্বাচনের আগে তাঁর পক্ষ থেকে পুলিশের ডিআইজি আবদুল বাতেনের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ করা হয়েছিল। ভোটের আগে দিন মধ্যনগর থানার পুলিশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগও দেন তাঁরা। এতে আবদুর রাজ্জাকের পরিবার ও পুলিশ ক্ষুব্ধ। এর জেরেই হামলা হয়েছে।
মধ্যনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এমরান হোসেন জানান, ঘটনার পর থেকে গ্রামে পুলিশ মোতায়েন আছে। ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের আটকের চেষ্টা চলছে। হয়রানির অভিযোগ প্রসঙ্গে ওসি বলেন, ‘এসব অপপ্রচার । কোনো ভিত্তি নেই। আমি আহত সাইদুর রহমানকে নৌকা করে চিকিৎসার জন্য পাঠিয়েছি। অন্য কেউ মামলা করতে চাইলে সেটিও আমরা নেব।’