সুনামগঞ্জে ‘কাঁঠাল’ নিয়ে সংঘর্ষ: আরও একজনের মৃত্যু
সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলায় মসজিদে একটি কাঁঠাল নিলামের জেরে হওয়া সংঘর্ষে আহত আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। হাসনাবাদ গ্রামের ওই বাসিন্দার নাম মোখলেছুর রহমান (৬২)। গতকাল সোমবার রাতে তিনি মারা যান। এরপর সকালে খবর পেয়ে পুলিশ ওই ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে পাঠায়।
পুলিশ বলছে, এই মৃত্যু নিয়ে তাদের সন্দেহ আছে। এটা স্বাভাবিক মৃত্যুও হতে পারে। মোখলেছ সংঘর্ষে জড়িত ছিলেন কি না, তারা সেটি খোঁজ নিয়ে দেখছে।
সুনামগঞ্জের সহকারী পুলিশ সুপার শুভাশিস ধর প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা মোখলেছুর রহমানের মৃত্যুর বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। এ কারণেই তাঁর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এটি স্বাভাবিক মৃত্যুও হতে পারে।’
তবে স্থানীয়ভাবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মোখলেছুর রহমান সংঘর্ষের সময় ঘটনাস্থলে ছিলেন। তিনি মালদর আলী পক্ষের লোক। সকালে পুলিশকে তাঁর মৃত্যুর খবরটি জানালে পুলিশ গিয়ে বাড়ি থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করে।
গতকাল সকালে শান্তিগঞ্জ উপজেলার হাসনাবাদ গ্রামে মালদর আলী ও দ্বীন ইসলাম পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে সে সময় ৩ জন নিহত হন, আহত হন ২০ জন। নিহত ব্যক্তিরা হলেন হাসনাবাদ গ্রামের নজরুল ইসলাম (৪০), বাবুল মিয়া (৫০) ও শাহজাহান মিয়া (৫০)। পুলিশ এ ঘটনায় ছয়জনকে আটক করেছে। গ্রামে পুলিশ মোতায়েন আছে।
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, হাসনাবাদ গ্রামের মসজিদে গত শুক্রবার জুমার নামাজের পর এক ব্যক্তির দান করা একটি কাঁঠাল নিলামে বিক্রি করা হয়। এক ব্যক্তি ওই কাঁঠাল ২৫০ টাকায় কিনে নেন। পরে আরেকজন এসে সেটি এক হাজার টাকা দাম দেবেন বলেন। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে তর্কাতর্কি শুরু হয়। পরে বয়োজ্যেষ্ঠ মুসল্লিরা তাঁদের শান্ত করে বিদায় দেন। এরপরও এ নিয়ে গ্রামের শহিদুল ইসলাম ও মালদর মিয়ার পক্ষের লোকজনের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। স্থানীয়ভাবে জনপ্রতিনিধিরা এ বিষয়ে কোনো বিবাদে না জড়ানোর জন্য দুই পক্ষকে অনুরোধ করেন। কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি। গতকাল সকালে উভয় পক্ষের লোকজন লাঠিসোঁটা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হন। এতে গতকাল মারা যান তিনজন, আজ মঙ্গলবার মারা গেলেন আরেকজন।