রাজশাহীতে দুই হাতে গুলি চালানো জহিরুল আরেক মামলায় ৭ দিনের রিমান্ডে
রাজশাহীতে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে দুই হাতে গুলি চালিয়ে আলোচনায় আসা যুবলীগ কর্মী জহিরুল হক ওরফে রুবেলকে (৪১) আরেকটি হত্যা মামলায় সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজশাহী মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১–এর বিচারক মো. ফয়সল তারেক এই আদেশ দেন।
পুলিশ জহিরুলকে রাজশাহীর বেসরকারি বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাকিব আনজুম হত্যা মামলায় ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেছিল। এর আগে রাজশাহী মহানগর ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাংগঠনিক সম্পাদক আলী রায়হান হত্যা মামলায় একই আদালত ১৫ সেপ্টেম্বর জহিরুলের পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেছিলেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার পর কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে জহিরুলকে আদালতে আনা হয়। আদালত থেকে বের করার সময় বিক্ষুব্ধ লোকজন তাঁকে ঘিরে ধরে ডিম, ইটপাটকেল ও জুতা নিক্ষেপ শুরু করেন। এ সময় ভিডিও ধারণ করতে গেলে দুই সাংবাদিককে লাঞ্ছিত করা হয়। তাঁদের একজনের মুঠোফোন কেড়ে নিয়ে ভেঙে ফেলা হয়েছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
১৪ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে জহিরুলকে কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে আটক করে র্যাবের একটি দল। পরদিন রাজশাহীতে এনে রোববার তাঁকে আদালতে তোলে পুলিশ। রাজশাহী নগরের চণ্ডীপুরের বাসিন্দা জহিরুল সাবেক মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। যুবলীগের কর্মী হিসেবে পরিচিত জহিরুল গেল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করে পরাজিত হন।
রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, জহিরুলকে আরও একটি মামলায় পুলিশ ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট দুপুরে কয়েক হাজার ছাত্র-জনতা নগরের তালাইমারী মোড় থেকে মিছিল নিয়ে নগরের সাহেববাজারের দিকে যেতে থাকেন। এই খবরে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ অন্যরা রাইফেল, পিস্তল, রিভলবার, ককটেল ও দেশীয় অস্ত্র রামদা, চাপাতি, হাঁসুয়া নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমর্থকদের হত্যা উদ্দেশ্যে ঝাঁপিয়ে পড়েন। এ সময় যুবলীগ কর্মী জহিরুলসহ অন্যরা সাহেববাজার থেকে আলুপট্টি মোড়ের দিকে আসেন। আলুপট্টি মোড়ে তাঁরা ছাত্র-জনতার ওপর এলোপাতাড়ি গুলি ও ককটেল নিক্ষেপ করতে থাকেন। এ ঘটনায় ৭০ থেকে ৮০ জন শিক্ষার্থী আহত হন। বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাকিব আনজুম ঘটনাস্থলেই মারা যান।
একই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ রাজশাহী কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী আলী রায়হান ৮ আগস্ট রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ ঘটনায় পৃথক আরেকটি মামলা হয়। এ দুটি মামলার পাশাপাশি আরও দুটি মামলায় আসামি করা হয়েছে জহিরুলকে।