নাটোরে বাড়ি পোড়ানোর মামলায় রুহুল কুদ্দুসসহ ৬৮ বিএনপি নেতা-কর্মীর সাজা বাতিল
বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য রুহুল কুদ্দুস তালুকদারসহ ৬৮ জন বিএনপি নেতা-কর্মীর সাত বছরের কারাদণ্ড বাতিল করেছেন আদালত। আজ বুধবার দুপুরে নাটোরের প্রথম অতিরিক্ত দায়রা জজ এ এফ এম মারুফ চৌধুরী এই রায় দেন।
নাটোরের আওয়ামী লীগ নেতা আসাদুজ্জামানের করা বাড়ি পোড়ানোর এই মামলায় ২০০৭ সালে জরুরি বিধিমালায় তৎকালীন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রওনক মাহমুদ আসামিদের সাত বছরের কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেন।
নাটোরের প্রথম অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত সূত্রে জানা যায়, বিএনপি নেতা রুহুল কুদ্দুসসহ ৬৮ জন আসামির আজ আপিল শুনানির দিন ধার্য ছিল। আসামিদের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন নাটোর আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শরিফুল হক, আইনজীবী ফোরামের সভাপতি আলী আজগর খান। রাষ্ট্রপক্ষে সরকারি অতিরিক্ত কৌশলী আকরাম হোসেন শুনানি করেন। শুনানি শেষে আদালত রায় ঘোষণা করেন। রায়ে আদালত নিম্ন আদালতের দেওয়া সাত বছরের কারাদণ্ডাদেশ বাতিল করেন এবং আপিলকারী ৬৮ জন আসামির সবাইকে কারাদণ্ড থেকে অব্যাহতি দেন।
আদালত তাঁর পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন। আদালত জানান, ২০০৪ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি নলডাঙ্গা উপজেলার রামশাকাজিপুর গ্রামের ১৮টি বাড়িতে আগুন লাগানোর অভিযোগে সে সময় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা আলাদা আলাদা মামলা করেছিলেন। দীর্ঘদিন পর আসাদুজ্জামান নামে এক ভুক্তভোগী বাদী হয়ে ২০০৭ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি একই ঘটনা নিয়ে নলডাঙ্গা থানায় আবারও মামলা করেন। মামলায় ১০৫ জনকে আসামি করা হয়। তদন্তকারী কর্মকর্তা ৯৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। জরুরি বিধিমালা-২০০৭ এর আওতায় মামলাটি বিচার করেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। উক্ত আদালত আসামিদের তিনটি পৃথক ধারায় সর্বমোট ৭ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দিয়ে রায় দেন। রায়ে সংক্ষুব্ধ হয়ে আসামিরা আলাদা আলাদাভাবে তিনটি আপিল মামলা করেন। এর মধ্যে আজ দুটি আপিল মামলার রায় দেওয়া হয়।
আদালত রায় ঘোষণার সময় আসামিদের খালাস দেওয়ার যুক্তি হিসাবে আরও বলেন, মামলাটি আসামি রুহুল কুদ্দুসের ভাতিজা সাব্বির হোসেন হত্যা মামলার পাল্টা মামলা। ওই মামলায় আজকের মামলার বাদীসহ আসামিদের সাজা হয়। এই আক্রোশে বাদী ঘটনার তিন বছর পর এই মামলা করেন। ২০০৪ সালে ৮ থেকে ১০ জন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি যেসব মামলা করেছিলেন, তাতে এই আসামিরা ছিলেন না। তাই পরে তাঁদের আসামি করা নিয়ে সন্দেহের সৃষ্টি হয়। সর্বোপরি বাদী ও আসামি পরস্পর ভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী। এখানে আসামিদের হয়রানি করার প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে।
আদালতের সরকারি কৌসূলী আকরাম হোসেন বলেন, এটি রাজনৈতিক মামলা। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে সাবেক মন্ত্রী রুহুল কুদ্দুসসহ ৯৪ জনকে আসামি করা হয়েছিল বলে আদালতের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে। সেহেতু আদালত আজ ৬৮ জনকে খালাস দিয়েছেন। বাকি আসামিদের আপিল শুনানির অপেক্ষায় আছে।