মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলায় তদন্তকারী কর্মকর্তাকে জেরা
হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে কথিত স্ত্রীর করা ধর্ষণ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে জেরা করেছেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। আদালতে উপস্থিত করা হয় মামুনুল হককেও।
মঙ্গলবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক নাজমুল হকের আদালতে তদন্তকারী কর্মকর্তা সোনারগাঁ থানার তৎকালীন পরিদর্শক শফিকুল ইসলামকে জেরা করেন। এ নিয়ে এই মামলায় ৪০ সাক্ষীর মধ্যে বাদীসহ মোট ২৬ জন সাক্ষী সাক্ষ্য প্রদান করেছেন।
নারায়ণগঞ্জ আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. আসাদুজ্জামান প্রথম আলোকে জানান, মামলার বাদীসহ মোট ২৬ জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য প্রদান করেছেন। আগামী ১৯ মার্চ মামলার পরবর্তী তারিখ ধার্য করা হয়েছে।
এর আগে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে মামুনুল হককে কাশিমপুর কারাগার থেকে নারায়ণগঞ্জের আদালতে আনা হয়। সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে তাঁকে পুলিশি প্রহরায় আবার কাশিমপুর কারাগারে ফেরত পাঠানো হয়।
আসামিপক্ষের আইনজীবী ওমর ফারুক সাংবাদিকদের বলেন, ‘মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে জেরা করা হয়েছে। জেরায় তিনি অনেক প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেননি। এটা যে বানোয়াট ও সাজানো মামলা, উনার সাক্ষ্য ও জেরায় প্রমাণিত হয়েছে।’
ওমর ফারুক জানান, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বাদীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেননি, বাদীর কাছেও তিনি যাননি। তিনি কোনো সাক্ষ্যপ্রমাণ আদালতে উত্থাপন করতে পারেননি। আজ জেরা শেষ হয়নি। আদালতের কাছে আরও জেরার জন্য সময় চাওয়া হয়েছে। সুষ্ঠুভাবে জেরা সম্পন্ন করতে পারলে মামুনুল হক বেকসুর খালাস পাবেন বল আশাবাদী তাঁর আইনজীবী।
আদালতের সরকারি কৌঁসুলি রকিব উদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, আসামিপক্ষ তদন্তকারী কর্মকর্তাকে দুই দিন ধরে জেরা করছে। আসামিপক্ষের আইনজীবী জেরা করার জন্য আদালতের কাছে আরও এক দিন সময় চেয়েছেন। আসামিপক্ষ ইচ্ছাকৃতভাবে মামলাটি বিলম্বিত করার জন্য জেরা করার নামে বারবার সময় চাইছে।
২০২১ সালের ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে রয়েল রিসোর্টের একটি কক্ষে মামুনুল হক ও তাঁর কথিত স্ত্রীকে অবরুদ্ধ করে ছাত্রলীগ-যুবলীগ। পরে খবর পয়ে পুলিশ গিয়ে ওই দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় হেফাজত ও মাদ্রাসার ছাত্ররা রিসোর্টে হামলা চালিয়ে তাঁদের ছিনিয়ে নেয়। ওই ঘটনার ১৫ দিন পর মামুনুল হককে মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা থেকে ঢাকা মহানগর তেজগাঁও বিভাগের পুলিশ গ্রেপ্তার করে।
রয়েল রিসোর্ট–কাণ্ডের ঘটনার ২৭ দিন পর ২০২১ সালের ৩০ এপ্রিল সোনারগাঁ থানায় হাজির হয়ে ওই নারী বাদী হয়ে মামুনুল হকের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেন। ২০২১ সালের ১০ সেপ্টেম্বর মামুনুল হকের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। ২০২১ সালের ৩ নভেম্বর মামুনুল হকের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল ধর্ষণের মামলায় অভিযোগ গঠন করেন।