টঙ্গীতে পোশাক কারখানার ঝুট ব্যবসা নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ
গাজীপুরের টঙ্গীতে একটি পোশাক কারখানার বর্জিত মালামালের (ঝুট) ব্যবসাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। আজ বুধবার বেলা একটার দিকে টঙ্গীর পাগাড় সোসাইটির মাঠ এলাকার ‘উইন্ডি অ্যাপারেলস লিমিটেড’ নামক কারখানার মালামাল নিয়ে এ ঘটনা ঘটে। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেন। এ সময় অন্তত চারজন আহতের খবর পাওয়া গেছে।
বিএনপির নেতা-কর্মী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি কারখানাটির ঝুটের ব্যাপারে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হাসান উদ্দিন সরকারের সঙ্গে কারখানা কর্তৃপক্ষের চুক্তি হয়। সে চুক্তি অনুযায়ী আজ বুধবার হাসান উদ্দিনের ব্যক্তিগত সচিব (পিএস) হিসেবে পরিচিত জনি কিবরিয়া ও তাঁর লোকজন কারখানা থেকে ঝুট নিতে যান। কিন্তু এ সময় টঙ্গী পূর্ব থানা যুবদলের সদস্যসচিব নাজমুল মন্ডল ও তাঁর লোকজন তাঁদের বাধা দেন বলে অভিযোগ। পরে এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জনি কিবরিয়া প্রথম আলোকে বলেন, প্রায় ২৬ দিন আগে ঝুটের ব্যাপারে কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাঁদের চুক্তি হয়েছে। নিয়মানুযায়ী কারা বৈধ ব্যবসায়ী। কিন্তু ডিড (চুক্তি) হওয়ার পর থেকেই যুবদল নেতা নাজমুল ও তাঁর লোকজন নানাভাবে হুমকি দিচ্ছিলেন। পরে তাঁরা থার্ড পার্টির (তৃতীয় পক্ষ) কাছে মালামাল বিক্রি করে দেন। পরে ওই থার্ড পার্টির লোকজন বুধবার মালামাল বের করতে গেলে নাজমুল ও তাঁর লোকজন অস্ত্র, চাপাতি, রামদা নিয়ে তাঁদের বাধা দেয়। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। নাজমুলের লোকজন ফাঁকা গুলিও করেন।
অভিযোগের বিষয়ে যুবদল নেতা নাজমুল মন্ডল প্রথম আলোকে বলেন, ’এর আগেও আমরা কয়েকটি কারখানার ঝুট নিতে গিয়েছিলাম। কিন্তু হাসান উদ্দিন সরকার প্রতিবার আমাদের নিষেধ করেছেন। সিনিয়র নেতা হিসেবে আমরা তার কথা মেনে নিয়েছি। এটা (উইন্ডি অ্যাপারেলস লিমিটেড) আমাদের এলাকার ফ্যাক্টরি। সে হিসেবে ঝুট আমরা পাই। কারখানার লোকজনও আমাদের মাল দিবে বলছে। কিন্তু এর মধ্যেই আজ হঠাৎ করে হাসান উদ্দিন সরকারের লোকজন ঝুট বের করতে আসে।’
নাজমুল আরও বলেন, ‘আমাদের হাতে কোনো অস্ত্র ছিল না। উল্টো তারা অস্ত্র, রামদা, চাপাতি নিয়ে আমাদের লোকজনের উপর হামলা চালাইছে। আমার লোকজনকে মেরে আহত করছে।’
‘উইন্ডি অ্যাপারেলস লিমিটেডের’ এজিএম কামরুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের ঝুটের ব্যাপারে হাসান উদ্দিন সরকারের সঙ্গে ব্যবসায়িক ডিড হয়েছে। সে অনুযায়ী আজ তাঁর পিএস ও অন্যান্য লোকজন মালামাল নিতে এলে বিএনপির অন্য একটি পক্ষ তাঁদের বাধা দেয়। এ নিয়ে কারখানার বাইরে গন্ডগোল হয়েছে। পরে আমরা খবর দিলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।’
টঙ্গী পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ফরিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা ঘটনার পরপরই পুলিশ পাঠিয়েছি। মূলত কারখানাটির ঝুট নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের মাঝে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। তবে অস্ত্রের মহড়া বা গুলির বিষয়ে কোনো তথ্য পাইনি। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।’