প্যারোলে মুক্তি না পাওয়ায় কারাগারে আনা হলো বাবার লাশ, শেষবার দেখলেন ইউপি চেয়ারম্যান

বাবার মৃত্যুর পর কারাবন্দী কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার বুরুদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নাজমুল হুদা প্যারোলে মুক্তি না পাওয়ায় কিশোরগঞ্জ কারগারের ভেতরে তাঁর বাবার লাশ আনা হয়। সোমবার দুপুরে
ছবি: সংগৃহীত

বাবার মৃত্যুর পর শেষবার দেখতে এবং জানাজায় অংশ নিতে প্যারোলে মুক্তির আবেদন করেছিলেন কারাবন্দী কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার বুরুদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নাজমুল হুদা রুবেল। শেষ পর্যন্ত তিনি প্যারোলে মুক্তি পাননি। তবে তাঁর বাবার লাশ কারাগারের ভেতরে এনে তাঁকে শেষবারের মতো দেখার সুযোগ করে দিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ।

আজ সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জেলগেট থেকে মরদেহবাহী অ্যাম্বুলেন্সটি কারাগারের ভেতরে নিয়ে যায় কারা কর্তৃপক্ষ। পরে সেখানে বাবাকে শেষবারের মতো দেখেন ইউপি চেয়ারম্যান নাজমুল হুদা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে কিশোরগঞ্জ জেলা কারাগার কর্তৃপক্ষ।

এর আগে গতকাল রোববার রাতে ইউপি চেয়ারম্যান নাজমুলের বাবা জিয়া উদ্দিন রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালে মারা যান।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, বাবার জানাজায় অংশ নিতে ইউপি চেয়ারম্যান নাজমুলের পক্ষে তাঁর আইনজীবী সুজিত কুমার দে আজ সকালে জেলা প্রশাসকের কাছে নাজমুল হুদাকে প্যারোলে মুক্তি দিতে আবেদন করেছিলেন। পাকুন্দিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাখাওয়াত হোসেন জানান, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মতামত নিয়ে নিরাপত্তার স্বার্থে ইউপি চেয়ারম্যানের পক্ষে করা আবেদনটি নামঞ্জুর করা হয়। একই সঙ্গে গ্রেপ্তার ব্যক্তিকে তাঁর মৃত বাবাকে জেলগেটে দেখানোর ব্যবস্থা করতে কারা কর্তৃপক্ষকে বলা হয়।

রুবেলের মা নূর জাহান বেগম জানান, অনেক চেষ্টা করেও কিছুক্ষণের জন্য ছেলের মুক্তির ব্যবস্থা করা যায়নি। তাই জেলেই তাঁর স্বামীর লাশ নিয়ে আসা হয়েছে ছেলেকে একনজর দেখানোর জন্য। পরে বাড়িতে ওর বাবার জানাজা হয়। তিনি আরও বলেন, তাঁর ছেলে আওয়ামী লীগকে সমর্থন করলেও কোনো পদে নেই। তবু তার বিরুদ্ধে তিনটি মামলা হয়েছে।

স্বজনেরা জানান, দুপুর ১২টার দিকে মরদেহবাহী অ্যাম্বুলেন্স কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। মরদেহের সঙ্গে ইউপি চেয়ারম্যানের মা নূরজাহান বেগম ও অন্য স্বজনেরাও সেখানে যান। তবে অন্য স্বজনেরা ইউপি চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করতে পারেননি। কেবল মাকে দেখা করতে দেওয়া হয়েছে।

কিশোরগঞ্জ কারাগারের জেল সুপার রীতেশ চাকমা বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ইউপি চেয়ারম্যানের বাবাকে বহন করা অ্যাম্বুলেন্সটি কারাগারের ভেতরে নিয়ে আসে কারা কর্তৃপক্ষ। সেখানেই বাবার মরদেহ শেষবারের মতো দেখেন ইউপি চেয়ারম্যান। সেখানে মা নূরজাহান বেগমকে ছেলের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ দেওয়া হয় কয়েক মিনিটের জন্য।

গত ২ নভেম্বর আওয়ামী লীগ সমর্থক বুরুদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নাজমুল হুদাকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগে তিনটি মামলা রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। বর্তমানে তিনি কিশোরগঞ্জ কারাগারে বন্দী রয়েছেন।