বরিশালে মতবিনিময়
সব মত, পথ, বৈচিত্র্যময় চিন্তার বহিঃপ্রকাশ তুলে ধরাই গণমাধ্যমের কাজ: কামাল আহমেদ
রাজনৈতিক দলীয় আদর্শ দিয়ে সংবাদমাধ্যমকে প্রভাবিত করার ধারা বন্ধ করা দরকার বলে মন্তব্য করেছেন গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান কামাল আহমেদ। তিনি বলেছেন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নির্ভর করে প্রতিষ্ঠানের আর্থিক সচ্ছলতার ওপর। সব মত পথ বৈচিত্র্যময় চিন্তার বহিঃপ্রকাশ তুলে ধরাই গণমাধ্যমের কাজ। কিন্তু রাজনৈতিক দলবাজি, প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিকপক্ষ প্রভাব বিস্তার করে স্বাধীন সাংবাদিকতায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। গণমাধ্যমকে রাজনৈতিক দলবাজি বন্ধ করা দরকার।
আজ সোমবার বরিশাল নগরের বান্দরোড এলাকায় শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে বিভাগের ছয় জেলার সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সকাল সাড়ে ১০টায় এই সভা শুরু হয়ে চলে বেলা ২টা পর্যন্ত। মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন জেলার সাংবাদিকেরা গণমাধ্যমের সংস্কারের জন্য তাঁদের মতামত তুলে ধরেন।
সভায় কামাল আহমেদ বলেন, ‘একই হাউস থেকে একাধিক সংবাদপত্র বের হচ্ছে। পাঠক একই জিনিস ঘুরেফিরে পাচ্ছে। দেখা যায়, একই ব্যক্তির মালিকানায় পত্রিকাও আছে, টেলিভিশনও আছে। যে কেউ পত্রিকা বের করে ফেলছে। এগুলোয় শৃঙ্খলা আনতে হবে। দুষ্ট চক্র ভাঙতে হবে। আমরা আপনাদের কথা অনুযায়ী সুপারিশ করব। সেটি বাস্তবায়ন করবে সরকার। ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত আমরা পরামর্শ-সুপারিশ নেব।’
সভায় অংশ নেওয়া সাংবাদিকেরা মফস্বল সাংবাদিকদের বেতন কাঠামো নিয়ে তাঁদের মতামত তুলে ধরে বলেন, ওয়েজ বোর্ড দেওয়া হয় কিন্তু মফস্বলের সাংবাদিকেরা এর সুবিধা পান না। কিছু পত্রিকা ন্যূনতম বেতন-ভাতা দিলে অধিকাংশ কোনো বেতন-ভাতা দেয় না।
বক্তারা বলেন, সাংবাদিকদের রুটিরুজির সংস্থান না করে ভালো সাংবাদিকতা আশা করা যায় না। মানোন্নয়ন করা অসম্ভব। এসব কারণেই সাংবাদিকতার মান ক্ষুণ্ন হচ্ছে। এ জন্য ওয়েজ বোর্ডকে পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন। ঢাকার বাইরেও সংবাদকর্মীদের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। এ ছাড়া অনেকে অভিজ্ঞতা ছাড়াই সম্পাদক হয়ে যাচ্ছেন। এর একটি নীতিমালা থাকা দরকার।
জবাবে কামাল আহমেদ বলেন, ব্যক্তিগতভাবে আর্থিক স্বচ্ছতা না থাকলে সেই ব্যক্তি অনৈতিক পথে হাঁটবেন, এটাই স্বাভাবিক। সাংবাদিকদের আর্থিক সচ্ছলতা নিশ্চিত করতে হবে। ওয়েজ বোর্ডের সুবিধা পান মালিকেরা, সাংবাদিকেরা পান না। রাজনৈতিক চাপে গণমাধ্যমের ইতিবাচক পরিবর্তন হয় না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান বলেন, ‘চলতি মাসেই কমিশনের কাজ শেষ করা হবে। এরপর আমরা আপনাদের মতামতগুলো সরকারের কাছে প্রতিবেদন আকারে জমা দেব।’
মতবিনিময় সভায় বিভাগের শতাধিক সাংবাদিক অংশ নেন। এ সময় সংস্কার কমিশনের সদস্য আকতার হোসেন খান, কামরুনেসা হাসান, জিমি আমীর, টিটু দত্তগুপ্ত ও আবদুল্লাহ আল মামুন উপস্থিত ছিলেন।