শিশুকে ঘোড়ার লাথি মারা নিয়ে বড়দের সংঘর্ষ, প্রাণ গেল দুজনের
বাড়ির এক শিশুকে প্রতিবেশীর একটি ঘোড়া লাথি মারে। এ নিয়ে প্রথমে নারীদের ঝগড়া, পরে সংঘর্ষে লিপ্ত হন দুই পক্ষের পুরুষেরা। এতে প্রাণ গেছে দুই পক্ষের দুজনের। সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার থলেরবন্দ গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।
সংঘর্ষে আহত দুজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলে গতকাল সোমবার গভীর রাতে তাঁদের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় পুলিশ ছয়জনকে আটক করেছে। নিহত দুজন হলেন থলেরবন্দ গ্রামের আবদুল আউয়াল (৬৫) ও নূর মোহাম্মদ (২৫)।
পুলিশ, জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় বাসিন্দা সূত্রে জানা গেছে, থলেরবন্দ গ্রামের বাসিন্দা সুহেল মিয়া ও শের আলী পক্ষের একটি ঘোড়া আছে। ঘোড়াটি গতকাল সন্ধ্যায় প্রতিবেশী জব্বার মিয়ার পরিবারের এক শিশুকে লাথি মারে। এ নিয়ে প্রথমে দুই পরিবারের নারীরা ঝগড়া করেন। এরপর তারাবিহর নামাজের পর বিষয়টি জেনে দুই পরিবারের পুরুষেরা উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। একপর্যায়ে দুই পক্ষ সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এতে আহত হন ১০ জনের মতো।
আহত ব্যক্তিদের মধ্যে জব্বার মিয়ার পক্ষের নূর মোহাম্মদকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সুহেল মিয়ার পক্ষের আবদুল আউয়ালকে ভর্তি করা হয় সুনামগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা সদর হাসপাতলে। নূর মোহাম্মদ সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে এবং আবদুল আউয়াল দিবাগত রাত দুইটার দিকে মারা যান।
স্থানীয় বাসিন্দাদের ভাষ্য, নূর মোহাম্মদ মারা যাওয়ার খবর গ্রামে পৌঁছালে প্রতিপক্ষের পুরুষেরা গ্রাম ছেড়ে পালান। এই সুযোগে জব্বার মিয়ার পক্ষের লোকজন প্রতিপক্ষের লোকজনের বাড়িঘরে হামলা ও লুটপাট চালান। অনেক ঘরের আসবাব, গরু ও ছাগল লুট করে নিয়ে যাওয়া হয়। গ্রামে পুলিশ পৌঁছালে পরিস্থিতি শান্ত হয়। রাতে আবার আবদুল আউয়ালের মৃত্যুর খবর পৌঁছালে জব্বার মিয়ার পক্ষের লোকজন গ্রাম ছেড়ে পালান। গতকাল রাতে ও আজ মঙ্গলবার সকালে পুলিশ ছয়জনকে আটক করেছে।
শিমুলবাক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহিনুর রহমান বলেন, তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে এই সংঘর্ষ ও হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
শান্তিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুক্তাদীর হোসেন বলেন, সংঘর্ষে দুই পক্ষের দুজন মারা গেছেন। লাশগুলো হাসপাতালে আছে। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন আছে। এ ঘটনায় ছয়জনকে আটক করা হয়েছে।
শান্তিগঞ্জ উপজেলার হাসনাবাদ গ্রামের মসজিদে গত বছরের ১০ জুলাই একটি কাঁঠালের নিলামকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে চারজন মারা যান।