ঈদের সকালে মুক্তিযোদ্ধা ও সরকারি চাকরিজীবী তাঁর তিন সন্তানকে পেটানোর অভিযোগ
শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার চরবাঘা এলাকায় এক বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁর সরকারি কর্মকর্তা তিন ছেলেকে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। জমিজমার বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের হামলায় আজ সোমবার সকাল ছয়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
আহত মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রশিদ সিকদার ও তাঁর ছেলে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক আলমগীর হোসেনকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আবদুর রশিদের ছেলে অপর দুই ছেলে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দার (এনএসআই) উপপরিচালক জাহাঙ্গীর হোসেন এবং বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীতে কর্মরত স্থপতি সাখাওয়াত হোসেনকেও মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ।
সখীপুর থানা ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ভেদরগঞ্জ উপজেলার চরবাঘা এলাকার বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রশিদ সিকদারের সঙ্গে প্রতিবেশী জব্বার সিকদারের জমি নিয়ে বিরোধ রয়েছে। ঈদ উপলক্ষে রশিদ সিকদারের ছেলেরা বাড়িতে এলে গতকাল রোববার বিকেলে তাঁদের ফসলি জমি মাপজোখ করতে যান। সেখানে জব্বার সিকদার তাঁদের বাধা দেন। এ ঘটনা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয়।
ঘটনাটি রশিদের সন্তানেরা পুলিশকে জানান। রোববার রাতে সখীপুর থানার পুলিশ বিষয়টির খোঁজ নিতে ওই এলাকায় যায়। এতে ক্ষুব্ধ হন জব্বার সিকদার ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা। এর জের ধরে আজ সকালে জব্বার সিকদার ও তাঁর লোকজন নিয়ে রশিদ ও তাঁর ছেলেদের ওপর হামলা করেন। তাঁদের মারধর করা হয়েছে, এমন অভিযোগ ওঠে। পরে সকাল ১০টার দিকে রশিদ সিকদারকে তাঁর সন্তানেরা শরীয়তপুর সদর হাসপাতেল আনেন চিকিৎসা করানোর জন্য। সেখানে রশিদ ও তাঁর ছেলে চিকিৎসক আলমগীর হোসেনকে ভর্তি করা হয়। আর ওই ঘটনায় আহত জাহাঙ্গীর হোসেন ও সাখাওয়াত হোসেনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের চিকিৎসক নজরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধা ভদ্রলোক হাতে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন। আরেকজনের মুখে ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে। প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর উন্নত চিকিৎসা দেওয়ার জন্য তাঁদের ভর্তি করা হয়েছে।’
মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জব্বার সিকদার। মুঠোফোনে প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘আমি কৃষক মানুষ। নিজের জমিজমা বুঝে খেতে চাই। কিন্তু রশিদ সিকদার তাঁর সন্তানদের প্রভাব দেখিয়ে আমার জমি দখল করেছেন। আমি সেই জমি ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করছি। আমি বা আমার কোনো লোকজন তাঁদের ওপর হামলা করেনি। আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে।’
সখীপুর থানার ভারপ্রপ্ত কর্মকর্তা ওবায়দুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘এক মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে জমিজমা নিয়ে প্রতিবেশীদের সঙ্গে ঝামেলা চলছে, এমন খবর পেয়ে গতকাল পুলিশ ওই এলাকায় গিয়েছিল। আজ সকালে সেখানে ঝামেলা হচ্ছে, এমন খবর পেয়ে পুলিশ যায়। দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়েছে শুনেছি। তবে কারা আহত হয়েছেন, তা বলতে পারছি না। ওই ঘটনার লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’