খুলনার দুই এমপির ‘শেখ বাড়ি’ ঘিরে লুটপাট চলছে, উৎসুক মানুষের ভিড়
খুলনা নগরের শেরেবাংলা সড়কের ময়লাপোতা এলাকায় একটি বাড়ি। দুই দিন আগেও বাড়ি ঘিরে খুলনাকেন্দ্রিক আওয়ামী লীগ ও প্রশাসনের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রিত হতো। সেই বাড়ির অবকাঠামো ছাড়া আর কিছু নেই। আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার পর লুট করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে সব আসবাব, দরজা-জানালা, এমনকি আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকেও লুটপাট করতে দেখা গেছে। যে যেভাবে পারছেন টিন, রড খুলে নিয়ে যাচ্ছেন।
ওই বাড়িটি বাগেরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন ও খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ সালাহউদ্দীন জুয়েলের। তাঁরা সদ্য পদত্যাগ করা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই। বাড়ি দুটি খুলনার মানুষের কাছে ‘শেখ বাড়ি’ নামে পরিচিত।
গতকাল সোমবার বিকেল থেকেই ওই বাড়ি ঘিরে ছিল সাধারণ মানুষের কৌতূহল। বিভিন্ন জায়গা থেকে শত শত মানুষ বাড়িটি দেখতে আসছিলেন। আজ সকালে গিয়েও দেখা গেছে সেই চিত্র। কেউ আগুনে পোড়া ধ্বংস হওয়া বাড়ির ছবি তুলছেন, কেউ আবার সেলফি তুলছেন। মোবাইলে ভিডিও করে রাখছেন অনেকেই।
আজগর আলী নামের এক ব্যক্তি তাঁর স্ত্রী ও ছোট মেয়েকে নিয়ে এসেছিলেন ‘শেখ বাড়ি’ দেখতে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘এই বাড়ি ঘিরে গত ১৫ বছরে কি না হয়েছে! রাজনীতি, প্রশাসন—সবই এই বাড়ির ইশারায় উঠত-বসত। কত মানুষ যে তাঁদের সহায়–সম্বল এই বাড়ির লোকদের কাছে হারিয়েনছে, তার ইয়ত্তা নেই। আজ তার কোনো অস্তিত্বই নেই। বেশি অহংকার কোনো দিনও ভালো কিছু বয়ে আনে না, এটা তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা অসহযোগ কর্মসূচি চলাকালে গত রোববার দুপুরের দিকে ওই বাড়িতে আগুন ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। তখনো লুটপাটের কোনো ঘটনা ঘটেনি। লুটপাট মূলত শুরু হয় গতকাল দুপুরের পর থেকে।
শুধু শেখ বাড়ি নয়, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র ও খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি তালুকদার আবদুল খালেকের বাড়ি, খুলনা জেলা পরিষদ কার্যালয় ও জেলা পরিষদের মালিকানাধীন পত্রিকা দৈনিক খুলনার কার্যালয়, খুলনা শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী কার্যালয়, খুলনা বেতার ভবন, খুলনা প্রেসক্লাবসহ খুলনা মহানগর–জেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের প্রায় সব নেতা–কর্মীর বাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান।