গাজীপুরে শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের ও আসাদুজ্জামান খানসহ ১৩৯ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা

ওপরে বাঁ থেকে—শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের, আ ক ম মোজাম্মেল হক, আসাদুজ্জামান খান; নিচে বাঁ থেকে—আজমত উল্লা খান, সিমিন হোসেন রিমি, মেহের আফরোজ চুমকি, রুমানা আলী টুসি
ছবি: সংগৃহীত

গাজীপুরে ২০ জুলাই ছাত্র আন্দোলন চলাকালে নূর আলম (২২) নামের এক যুবক গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহতের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৩৫ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা হয়েছে। নিহত নূর আলমের বাবা মো. আমির আলী (৪৪) বাদী হয়ে গতকাল মঙ্গলবার রাতে বাসন থানায় মামলাটি করেছেন। তাঁর বাড়ি কুড়িগ্রাম সদরের মোল্লাপাড়া মধ্য কুমরপুর এলাকায়। তিনি গাজীপুর মহানগরের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের তেলিপাড়া এলাকায় ভাড়া বাড়িতে থাকেন।

ওই মামলার অপর আসামিরা হলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, সাবেক সংসদ সদস্য সিমিন হোসেন রিমি, মেহের আফরোজ (চুমকি), রুমানা আলী (টুসি), গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লা খান, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান (কিরণ), মহানগর আওয়ামী লীগের নেতা মতিউর রহমান প্রমুখ। এ ছাড়া ১০০-১৩০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।

বাদী এজাহারে উল্লেখ করেন, গত ২০ জুলাই সকালে শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামালসহ ছয়জনের নির্দেশ অনুযায়ী বন্দুক, পিস্তল, লাঠি, লোহার রড, রামদা, চাপাতি, দাসহ দেশি অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ছাত্র আন্দোলন দমনে নামেন। তাঁরা সকাল পৌনে ১০টার দিকে তেলিপাড়ায় হানিমুন রেস্টুরেন্টের সামনে ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কে অবস্থানরত আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতার ওপর হামলা করেন। তাঁরা কিল–ঘুষি, লাঠি ও লোহার রড দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর, ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খোরশেদ আলম রশিদসহ ২৫ থেকে ৩০ জনকে রক্তাক্ত জখম করেন। একপর্যায়ে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লা খান ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান সশরীর উপস্থিত থেকে হামলার হুকুম দেন। তাঁদের হুকুমে এজাহারভুক্ত ও অজ্ঞাত আসামিরা ছাত্র-জনতাকে হত্যার উদ্দেশ্যে এলোপাতাড়িভাবে গুলি ছুড়তে শুরু করেন। সকাল সোয়া ১০টার দিকে নূর আলমের (২২) ডান চোখের ওপর অংশ দিয়ে ভেতরে গুলি ঢুকে মাথার পেছন দিয়ে বের হয়ে যায়। এতে নূর আলম ঘটনাস্থলেই নিহত হন।

ঘটনার আকস্মিকতায় হতভম্ব হয়ে এবং পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে বাদী তখন আইনি সহায়তা না নিয়ে তাৎক্ষণিক ছেলের লাশ নিয়ে গ্রামের বাড়িতে চলে যান এবং দাফন সম্পন্ন করেন। পরে দেশের অরাজক পরিস্থিতির কারণে মামলা করতে বিলম্ব হয়। বাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম এজাহারভুক্ত ও অজ্ঞাত মিলিয়ে ২৬৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।