২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

‘জলদস্যুরা মোবাইল নিয়ে নিচ্ছে, আর কথা হবে না’

মোহাম্মদ শামসুদ্দিন
ছবি: সংগৃহীত

‘জলদস্যুরা মোবাইল নিয়ে নিচ্ছে, আর কথা হবে না।’ এ কথা বলতে বলতেই সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এটাই ছিল মোহাম্মদ শামসুদ্দিনের সঙ্গে তাঁর স্ত্রী ফারজানা সুলতানার শেষ কথা।

শামসুদ্দিন ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর অয়েলার পদে কর্মরত। গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় বেলা দেড়টার দিকে জলদস্যুরা জাহাজটির নিয়ন্ত্রণ নেয়। এটি মোজাম্বিক থেকে দুবাই যাচ্ছিল। এতে ২৩ বাংলাদেশি নাবিক রয়েছেন। তাঁরা জিম্মি হওয়ার খবর পাওয়ার পর উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় দিন কাটছে নাবিকদের স্বজনদের।

আরও পড়ুন

মোহাম্মদ শামসুদ্দিন ও ফারজানা সুলতানা দম্পতির তিন মেয়ে। দুই মেয়ে স্কুলে পড়ে, ছোট মেয়ের বয়স ১৪ মাস। ফারজানা সুলতানা বলেন, ‘মঙ্গলবার বিকেল চারটার দিকে স্বামীর (শামসুদ্দিন) সঙ্গে কথা বলেন। তখন তিনি বলেছিলেন, ‘জাহাজে জলদস্যু উঠতে চেষ্টা করছে, দোয়া করিও, আমাদের জন্য দুশ্চিন্তা করিও না।’ এরপর সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার সময় কথা বলতে বলতে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। জানি না তাঁরা কেমন আছেন। খুব চিন্তা হচ্ছে তাঁদের জন্য।’

দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে মোহাম্মদ শামসুদ্দিনের পরিবারের সদস্যদের। আজ বুধবার সকালে চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বৈরাগ ইউনিয়নের সেন্টার এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

শামসুদ্দিনের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বৈরাগ ইউনিয়নের সেন্টার এলাকায়। আজ বুধবার সকাল ৯টার দিকে সেন্টার এলাকায় শামসুদ্দিনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় অনেকটা হতবুদ্ধি হয়ে বসে আছেন মা শাকেরা বেগম। শামসুদ্দিনের ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ে রামিসা তাসনিম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া আয়েশা তাসনিম বিদ্যালয়ে যাওয়ার জন্য বের হচ্ছে।

শাকেরা বেগম বলেন, তাঁর স্বামীর অনেক সম্পত্তি ছিল। ১০ বছর আগে মারা যাওয়ার আগে তিনি সব বিক্রি করে দেন। দুই মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে। দুই ছেলে নিয়ে কষ্টের সংসার তাঁর। হঠাৎ শামসুদ্দিনের কী বিপদ হলো!

পরিবারের সদস্যরা জানান, তিন বছর আগে জাহাজে চাকরি নেন শামসুদ্দিন। বছরে ছয় মাস সমুদ্রে থাকেন। অবশিষ্ট ছয় মাস বেকার সময় কাটে। সর্বশেষ গত ডিসেম্বরে জাহাজে ওঠেন শামসুদ্দিন। জুনের দিকে তাঁর ঘরে ফেরার কথা।

আরও পড়ুন

গতকাল বাংলাদেশ সময় বেলা দেড়টার দিকে জলদস্যুরা জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর নিয়ন্ত্রণ নেয়। চট্টগ্রামের কবির গ্রুপের এই জাহাজ পরিচালনা করছে গ্রুপটির সহযোগী সংস্থা এস আর শিপিং লিমিটেড। ২০১০ সালে গ্রুপটির জাহাজ ‘এমভি জাহান মণি’ ছিনতাই করেছিল সোমালিয়ার জলদস্যুরা। তিন মাসের মাথায় মুক্তিপণ দিয়ে জাহাজটি ছাড়িয়ে এনেছিল কবির গ্রুপ।