ছাত্রদল নেতার পোস্ট দেওয়ার পর আগুনে পুড়ল যুবলীগের সাবেক নেতার ঘর

গতকাল গভীর রাতে সন্দ্বীপ পৌরসভা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফজলে এলাহীর ঘরে আগুন দেওয়া হয়ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে যুবলীগের সাবেক নেতা ফজলে এলাহীর ঘরে আগুন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে। গতকাল বুধবার রাতে সন্দ্বীপ পৌরসভা ছাত্রদলের নেতা আবু সায়ীদ খান তাঁর ওপর হামলার কথা উল্লেখ করে ফেসবুকে পোস্ট দেন। এরপরেই এই অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। ফজলে এলাহীকে গতকাল রাতে পৌরসভায় তাঁর নানার বাড়ি থেকে আটক করেছে পুলিশ।

ফজলে এলাহী সন্দ্বীপ পৌরসভা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। কয়েক বছর ধরে তিনি এলাকায় থাকেন না বলে জানান স্থানীয় লোকজন। আবু সায়ীদ খান সন্দ্বীপ পৌরসভা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক। ঘটনার বিষয়ে জানতে ফজলে এলাহীর পরিবারের কারও সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

ছাত্রদলের নেতা আবু সায়ীদ খান বলেন, গতকাল রাত আটটার দিকে সন্দ্বীপ পৌরসভার শাহজাহান মিয়ারগো তেমাথায় অবস্থিত তাঁর ফার্মেসিতে এসে হামলা চালান ফজলে এলাহী। দোকানে ঢুকে তাঁকে মারধর শুরু করেন তাঁরা। একপর্যায়ে গুলিও ছোড়েন ফজলে এলাহী। এরপর রাত নয়টার দিকে প্রশাসন ও দলীয় সহায়তা চেয়ে নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দেন আবু সায়ীদ।

পোস্ট দেওয়ার ঘণ্টাখানেক পর ফজলে এলাহীর ঘরবাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে আবু সায়ীদ খান দাবি করেন, ‘আমাদের দলের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের জন্য আওয়ামী লীগের লোকজনের সহায়তায় ফজলে এলাহী নিজের বাড়িতে আগুন দিয়েছেন।’

সন্দ্বীপ পৌরসভায় ফজলে এলাহীর বাড়ির আশপাশের বাসিন্দারা জানান, গতকাল রাত ১০টার দিকে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের কর্মী-সমর্থকদের প্রায় ৭০ থেকে ৮০ জনের একটি দল এসে ফজলে এলাহীর দুটি ঘরে আগুন দেয়। একটি পুরোনো টিনের ঘর অন্যটি নতুন দালান। দুটি ঘরই আগুনে পুড়ে গেছে। এ সময় ফজলে এলাহী বা তাঁর পরিবারের কোনো সদস্য সেখানে অবস্থান করছিলেন না। রাত ৩টা পর্যন্ত বাড়িতে আগুন জ্বলতে দেখেছেন প্রতিবেশীরা। ফজলে এলাহী ছাড়া তাঁর পরিবারের অন্য সদস্যরা যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরে বসবাস করেন বলে জানা যায়।

সন্দ্বীপ উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব আলমগীর হোসাইন ঠাকুর আগুন লাগানোর বিষয়টি নাকচ করে প্রথম আলোকে বলেন, ‘ফজলে এলাহীর কর্মকাণ্ডে দীর্ঘদিন ধরে সেখানকার মানুষ অতিষ্ঠ। অতিষ্ঠ এলাকাবাসীই তাঁর বাড়িঘরে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করে থাকতে পারেন। এ ঘটনায় আমাদের দলের কারও সম্পৃক্ততা নেই।’

এ বিষয়ে সন্দ্বীপ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম সফিকুল ইসলাম চৌধুরী প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, গতকাল রাতে ফজলে এলাহীকে পৌরসভা এলাকায় অবস্থিত তাঁর নানাবাড়ি থেকে আটক করা হয়েছে। তাঁর সঙ্গে কোনো অস্ত্র পাওয়া যায়নি। ফজলে এলাহীর ঘর জ্বালিয়ে দেওয়ার ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি থানায়।